সতর্কতা: ঘুম থেকে উঠে একটা হাই তুললেন, আর প্যারালাইসিস হয়ে গেল! অবিশ্বাস্য এই ঘটনায় শিউরে উঠবেন আপনিও – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
আমরা সবাই হাই তুলি, বিশেষ করে ঘুম থেকে ওঠার পর। কিন্তু একটা হাই তোলার পর যদি আপনার শরীর প্যারালাইজড হয়ে যায়, তাহলে কেমন হবে? শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এমন ঘটনাই ঘটেছে হেইলি ব্ল্যাক নামের এক নারীর জীবনে। একটা সাধারণ হাই তোলার পর কী ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে, তার হাড়হিম করা বর্ণনা জেনে নিন।
হঠাৎই শরীরের অর্ধেক অংশ অবশ!
হেইলি দ্য সান পত্রিকাকে জানান, একদিন সকালে নবজাতক মেয়ের হাই তোলা দেখে তিনিও হাই তোলেন। আর ঠিক তখনই তার শরীরের অর্ধেক অংশে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার মতো তীব্র ঝাঁকুনি লাগে। মুহূর্তের মধ্যে তার হাত শূন্যে আটকে যায় এবং মনে হয় যেন তার ফিট ধরেছে। তিনি নিশ্চিত হন, তার সাথে অত্যন্ত গুরুতর কিছু ঘটেছে। কিন্তু তার স্বামী প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারেননি, বরং মজা করে বলেন, “সকাল পাঁচটা বাজে, তুমি ঠিক আছো, কিছুই হয়নি।”
কিন্তু হেইলির অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। শেষমেশ জোর করে স্বামীকে রাজি করান জরুরি পরিষেবা নম্বরে ফোন করার জন্য। হাসপাতালে যাওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সের ঝাঁকুনিতে তার মেরুদণ্ড ভেঙে যাওয়ার মতো ব্যথা হচ্ছিল। চিকিৎসকরা প্রথমে তার সমস্যার কারণ খুঁজে বের করতে পারেননি। কিন্তু একাধিক পরীক্ষার পর আসল কারণ জানা যায়। হাই তোলার সময় তার ঘাড়ের দুটি কশেরুকা (vertebrae) স্থানচ্যুত হয়ে মেরুদণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে এই গুরুতর আঘাত হয়।
চিকিৎসকদের চমকে দিল এই রোগ
হেইলির মেরুদণ্ডে মারাত্মক আঘাত লাগে এবং তার শরীরের ডান অংশ সম্পূর্ণরূপে প্যারালাইজড হয়ে যায়। চিকিৎসকরা তার মাকে জানিয়েছিলেন, সার্জারির পরও তিনি হাঁটতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে ৫০-৫০ সন্দেহ রয়েছে। এমনকি সার্জারি থেকে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন কিনা সে বিষয়েও তারা নিশ্চিত ছিলেন না।
তবে অলৌকিকভাবে সার্জারি সফল হয় এবং হেইলি সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু এই ঘটনা তার জীবন সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে তিনি ফাইব্রোমায়ালজিয়া নামের এক বিরল রোগে আক্রান্ত হন, যা সারাজীবন তার শরীরে ব্যথা এবং ক্লান্তি সৃষ্টি করবে। এর কারণে তার পারিবারিক জীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
একটি হাই এখন তার কাছে বিভীষিকা
হেইলি জানান, এই দুর্ঘটনার পর তিনি পুরোপুরি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এবং সন্তানদের দেখভাল করতে পারেন না। তার জীবন সম্পূর্ণ ওলটপালট হয়ে গেছে। এখন হাই তোলা তার কাছে এক বিভীষিকায় পরিণত হয়েছে। যখনই তার হাই তোলার প্রয়োজন হয়, তখনই তিনি তা দমন করার চেষ্টা করেন। তবে তিনি তার চিকিৎসা দলের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি হুইলচেয়ারে নেই, এটা একটা অলৌকিক ঘটনা। আমি এখানে আছি, হাঁটতে পারি এবং আমার সন্তানদের সাথে থাকতে পারি, এর জন্য আমি প্রতিদিন তাদের ধন্যবাদ জানাই।”