বিদ্রোহী স্বভাব থেকে আবেগঘন সঙ্গীত: কেন জুবিনের জন্য এত কেঁদেছিল আসাম? রহস্য ফাঁস করলেন মুখ্যমন্ত্রী – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী জুবিন গার্গ (৫২)-এর আকস্মিক মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ গোটা আসাম। সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিংয়ের সময় মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হন এই তারকা। তাঁর মৃত্যুর খবর সামনে আসার পর থেকেই জুবিন ভক্তদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। লক্ষাধিক মানুষ চোখের জলে তাঁকে শেষ বিদায় জানাতে জড়ো হয়েছিলেন।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও এই শোকের সঙ্গী। জুবিনের জন্য কেন আসামের মানুষ এত আবেগপ্রবণ, তার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আসামের বাইরে অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন, জুবিনের জন্য কেন আমরা এত আবেগপ্রবণ? এর কোনো একটি নির্দিষ্ট উত্তর নেই, তবে তিনটি কারণ স্পষ্ট। প্রথমত, তাঁর সঙ্গীত সরাসরি মানুষের হৃদয়ে পৌঁছাত এবং আসামের সংস্কৃতিকে ধারণ করত। দ্বিতীয়ত, তাঁর সাহসিকতা ছিল অসাধারণ। তিনি জন্ম থেকেই বিদ্রোহী এবং নিজের মতামত প্রকাশে নির্ভীক ছিলেন। কিন্তু সবথেকে বড় কারণ, তিনি এই পৃথিবীর সবচেয়ে দয়ালু এবং সাহায্যকারী মানুষদের একজন ছিলেন। জুবিন সবসময় আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’

মৃত্যুর ঠিক আগের দিন স্কুবা ডাইভিং

জানা গেছে, জুবিন গার্গ ২০ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের নর্থ ইস্ট ফেস্টিভ্যালে পারফর্ম করার কথা ছিল। কিন্তু তার ঠিক আগের দিন, অর্থাৎ ১৯ সেপ্টেম্বর, স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়েই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে অনুরাগীরা গভীরভাবে শোকাহত। জুবিনের মরদেহ প্রথমে দিল্লি এবং পরে গুয়াহাটি নিয়ে আসা হয়। ২১ সেপ্টেম্বর পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

রাজ্যজুড়ে তিন দিনের শোক

জুবিনের মৃত্যুতে কেবল সঙ্গীত জগৎই নয়, পুরো আসাম শোকে মূহ্যমান। আসাম সরকার ২০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে। এই সময়কালে সমস্ত বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হয়েছিল।

অসাধারণ শেষকৃত্য, নাম উঠল রেকর্ড বুকে

জুবিনের শেষযাত্রায় লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল নামে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ, এমনকি বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিও তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন। জনতার এই বিপুল উপস্থিতি একটি রেকর্ড গড়েছে। লিমকা বুক অফ রেকর্ডসে জুবিনের শেষকৃত্যকে ইতিহাসের বৃহত্তম গণ-শেষকৃত্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

জুবিন গার্গ সঙ্গীত জগতে নিজের এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিলেন। আসামিয়া ছাড়াও তিনি বহু ভাষায় গান গেয়েছেন। তাঁর বিখ্যাত বলিউড গান ‘ইয়া আলী’ আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *