ভারতের এক রহস্যময় রাজ্য, যেখানে বিষধর সাপ বা কুকুর নেই, কেন এমন অদ্ভুত নিয়ম? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
ভারতের অন্যতম সুন্দর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপ, যা আরব সাগরের বুকে এক টুকরো স্বর্গ। এটি শুধুমাত্র সৈকতপ্রেমীদের জন্য নয়, বরং একটি সুরক্ষিত পরিবেশেরও উদাহরণ। ৩৬টি দ্বীপের এই অঞ্চলে এক অদ্ভুত এবং কঠোর নিয়ম প্রচলিত। এখানে বিষধর সাপ বা কুকুর নেই, এবং বাইরের কোনো কুকুর নিয়ে যাওয়াও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ফলে, এই রাজ্যে আজ পর্যন্ত কোনো সর্পদংশন বা জলাতঙ্ক (রেবিস)-এর ঘটনা ঘটেনি।
এই কঠোর নিয়ম কেন?
লাক্ষাদ্বীপের এই অনন্য নীতির মূল কারণ হলো এখানকার নাজুক বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই দ্বীপগুলো প্রাকৃতিকভাবেই সাপ-মুক্ত। অন্যদিকে, যদি কুকুর আনা হয়, তাহলে এখানকার বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে এই নীতি বছরের পর বছর ধরে কার্যকর রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র পরিবেশ রক্ষার জন্যই নয়, বরং মানুষের সুরক্ষার জন্যও।
লাক্ষাদ্বীপের জীববৈচিত্র্য
যদিও এখানে কুকুর বা সাপ নেই, তবুও লাক্ষাদ্বীপের বন্যপ্রাণীর অভাব নেই। এই দ্বীপটি অসংখ্য পাখির অভয়ারণ্য, যেখানে রঙিন সামুদ্রিক পাখি থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা যায়। বিশেষত পিট্টি দ্বীপ একটি বিখ্যাত পক্ষীনিবাস, যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বাসা বাঁধে। সমুদ্রের গভীরে রয়েছে বিচিত্র সব সামুদ্রিক প্রাণী। এখানে ডুগং নামক বিরল সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীরও দেখা মেলে, যাকে ‘সামুদ্রিক গরু’ বলা হয়।
পাশের রাজ্য, সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র
লাক্ষাদ্বীপের প্রতিবেশী রাজ্য কেরালা। অবাক করার বিষয় হলো, যেখানে লাক্ষাদ্বীপে একটিও সাপ নেই, সেখানে কেরালায় সাপের প্রজাতির সংখ্যা ভারতে সর্বাধিক। একইরকম ভৌগোলিক অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও দুটি রাজ্যের এই ভিন্ন চিত্র সত্যিই কৌতূহল সৃষ্টি করে।
লাক্ষাদ্বীপের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
মাত্র ৩২ বর্গ কিলোমিটারের এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০টি দ্বীপে প্রায় ৬৪,০০০ মানুষ বসবাস করে। এর মধ্যে কিছু দ্বীপে ১০০ জনেরও কম বাসিন্দা রয়েছে। বেশিরভাগ বাসিন্দা মুসলিম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ধর্মের মানুষও এখানে বাস করেন। এই ছোট্ট দ্বীপগুলোতেই লুকিয়ে আছে অনেক বড় বড় বিস্ময়।