এই পাঁচটি তেলই কি আপনার রান্নাঘরে? অজান্তেই মারাত্মক রোগ ডেকে আনছেন না তো! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

আমাদের প্রতিদিনের রান্নায় তেল একটি অপরিহার্য উপাদান। কিন্তু পুষ্টিবিদ প্রশান্ত দেশাইয়ের মতে, আমরা অজান্তেই এমন কিছু তেল ব্যবহার করছি, যা দীর্ঘমেয়াদে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। সাধারণ মনে হওয়া এসব তেল কীভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য নীরব ঘাতক হয়ে উঠছে, সেটাই উঠে এসেছে তাঁর বিশ্লেষণে।

কেন কিছু তেল নীরব ঘাতক?

পুষ্টিবিদ প্রশান্ত দেশাইয়ের মতে, সমস্যা শুধু তৈলাক্ত খাবার নয়, বরং সেইসব তেল যা আমরা স্বাস্থ্যকর ভেবে নিয়মিত ব্যবহার করি। রিফাইন বা পরিশোধিত তেল এর একটি বড় উদাহরণ। পরিশোধিত করার সময় তেলকে উচ্চ তাপমাত্রা এবং রাসায়নিকের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, যাতে তার মেয়াদ বাড়ে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় তেলের প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় এবং অবশিষ্ট অংশ শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে কোলেস্টেরল, লিভারের সমস্যা এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।

যে ৫ ধরনের তেল থেকে দূরে থাকা উচিত

১. পাম তেল: এটি বাজারে সবচেয়ে সস্তা এবং বহুল ব্যবহৃত তেল। প্যাকেটজাত খাবার থেকে শুরু করে স্ন্যাকস পর্যন্ত অনেক কিছুতেই এটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটি প্রচুর ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটে পূর্ণ। নিয়মিত ব্যবহারে স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ এবং সুগারের সমস্যা বাড়তে পারে।

২. ব্লেন্ডেড তেল: দেখতে স্বাস্থ্যকর মনে হলেও, দুই বা তার বেশি তেলের মিশ্রণে তৈরি এই তেল আসলে আরও বেশি ক্ষতিকর হতে পারে। এতে ভেজাল এবং রিফাইনিং প্রক্রিয়ার কারণে প্রাকৃতিক ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যায়।

৩. সয়াবিন এবং সানফ্লাওয়ার তেল: বেশিরভাগ মানুষ এই তেলকে হালকা এবং স্বাস্থ্যকর মনে করেন। কিন্তু পরিশোধিত সয়াবিন ও সানফ্লাওয়ার তেল শরীরে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ এর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এই ভারসাম্যহীনতাই প্রদাহ, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান কারণ।

৪. ভেজাল ঘি: বর্তমানে খাঁটি দেশি ঘি-এর বদলে বাজারে সহজলভ্য নকল ঘি-এর ব্যবহার বেড়েছে। এটি আসলে হাইড্রোজেনেটেড তেল, যা ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাটে পরিপূর্ণ। নিয়মিত এই ভেজাল ঘি ব্যবহার করলে ধমনীতে চর্বি জমে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।

সুস্থ থাকতে কী করবেন?

প্রশান্ত দেশাইয়ের পরামর্শ, রান্নায় কোল্ড-প্রেসড তেল, সর্ষের তেল, নারকেল তেল বা তিলের তেলের মতো ঐতিহ্যবাহী তেল ব্যবহার করা উচিত। এগুলি শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, বরং শরীরকে সঠিক পুষ্টিও জোগায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *