অবিশ্বাস্য! বিড়ালের খাবার খেয়ে জীবন কাটানো মানুষটিই বিলিয়নিয়ার, এরপর যা করলেন তা জানলে চমকে যাবেন – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

এককালে পেটের দায়ে বিড়ালের খাবার খেয়ে দিন কাটিয়েছেন। টাকার অভাবে জঙ্গলে, পাথুরে পাহাড়ে রাত কাটিয়েছেন। কিন্তু সেই জীবন থেকেই উঠে এসে একদিন তিনি হলেন বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী। এরপর যা করলেন তা আরও অবিশ্বাস্য! নিজের শত শত কোটি টাকার কো ম্পা নিই দান করে দিলেন পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য।

তিনি ইয়ভন শুইনার্ড। বিশ্বখ্যাত আউটডোর পোশাক সংস্থা পাটাগোনিয়ার প্রতিষ্ঠাতা। এখন তাঁর বয়স ৮৬। ধনকুবেরদের তালিকায় নাম ওঠায় তিনি নিজেই বিব্রত বোধ করেন। তাঁর কাছে ‘বিলিয়নিয়ার’ হওয়া মানে সাফল্যের বদলে ‘নীতিগত ব্যর্থতা’। এই মনোভাব থেকেই তিনি ২০২২ সালে এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেন।

নিজের এবং পরিবারের সঙ্গে মিলে পুরো পাটাগোনিয়া কো ম্পা নিটিই তিনি তুলে দেন একটি ট্রাস্ট ও অলাভজনক সংস্থার হাতে। এখন এই কো ম্পা নির লাভের শত শত কোটি ডলার খরচ হবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও পরিবেশ রক্ষার কাজে।

শুইনার্ডের জীবনটা ছিল আসলে এক ভবঘুরে রক ক্লাইম্বারের। টাকা বাঁচানোর জন্য মেক্সিকোর কুঁড়েঘরে থাকতেন, বন্ধুদের সঙ্গে ফল-মাছ খেয়ে দিন কাটাতেন। এমনকি মাত্র পাঁচ সেন্টে নষ্ট হওয়া ক্যানের বিড়ালের খাবারও কিনে খেতেন। অসুস্থ হলে ওষুধ কেনার টাকা জুটত না, তাই পোড়ানো কাঠকয়লা ও নুন মেশানো জল খেয়ে বমি করে সুস্থ হতেন।

১৯৭৩ সালে নিজের গাড়ি থেকে ক্লাইম্বিং সরঞ্জাম বিক্রি করে জন্ম দিয়েছিলেন পাটাগোনিয়ার। আজ যার মূল্য প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু শুইনার্ডের কাছে টাকা কখনওই মূল লক্ষ্য ছিল না। তাঁর কো ম্পা নির মূলমন্ত্রই ছিল—’আমরা ব্যবসা করি আমাদের পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য’।

শুরু থেকেই পাটাগোনিয়া পরিবেশ রক্ষায় নিজেদের মুনাফার অন্তত ১% খরচ করে এসেছে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতল আর অর্গানিক কটন দিয়ে পোশাক তৈরি করেছে। পুরোনো পোশাক মেরামত করে পুনরায় ব্যবহারের জন্যও প্রোগ্রাম চালু করেছে। এমনকি পরিবেশ নীতি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে দাঁড়াতেও এই ব্র্যান্ড পিছপা হয় না।

আজ শুইনার্ড আর ধনকুবেরদের তালিকায় নেই, আর এটাই যেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, সত্যিকারের অর্জন মানে টাকা জমানো নয়, বরং পৃথিবীকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়া।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *