মাত্র ৫টি সহজ কৌশলেই বিদায় হবে চিনি? চিকিৎসকের পরামর্শে লুকিয়ে আছে আসল রহস্য! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

আপনি কি চিনি ছাড়া একদিনও থাকতে পারেন না? সকালের চা থেকে রাতের ডেজার্ট – মিষ্টি ছাড়া যেন জীবন অচল। কিন্তু এই আসক্তিই কি ডেকে আনছে ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার বা ওবেসিটির মতো মারাত্মক রোগ? বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করছেন, অতিরিক্ত চিনি আমাদের শরীরের জন্য একপ্রকার ‘বিষ’। কিন্তু সমস্যা হলো, যারা মিষ্টিপ্রেমী তাদের জন্য চিনি সম্পূর্ণভাবে ত্যাগ করা প্রায় আসাম্ভব। তবে একজন ব্রিটিশ চিকিৎসক দাবি করছেন, মাত্র পাঁচটি সহজ কৌশলেই এই আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কীভাবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই রহস্য।

এনএইচএস-এর জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক রূপি আউজলা (Dr. Rupy Aujla) সম্প্রতি একটি ভিডিওতে তার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কীভাবে কয়েকটি সহজ পদক্ষেপ অনুসরণ করে তিনি নিজে চিনি খাওয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করেছেন।

প্রথমেই তিনি সকালে পুষ্টিকর প্রাতরাশ খাওয়ার কথা বলেছেন। সাধারণত আমরা যে সিরিয়াল, জ্যাম বা জুস খাই, তাতে অজান্তেই প্রচুর চিনি ঢুকে যায়। এর ফলে সকালে গ্লুকোজ বেড়ে আবার দ্রুত কমে আসে, যা সারাদিন ক্লান্তি ও অতিরিক্ত ক্ষুধার সৃষ্টি করে। এর বদলে তিনি প্রোটিন ও ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, যেমন ডিম বা আগের রাতের বেঁচে যাওয়া খাবার।

দ্বিতীয়ত, মিষ্টি পানীয় ত্যাগ করার কথা বলেছেন। সোডা, প্যাকেটজাত জুস বা আইসড কফির মতো পানীয়গুলো আসলে ‘লুকানো’ চিনির আধার। এর পরিবর্তে জল, দারচিনি মেশানো হার্বাল চা বা ব্ল্যাক কফি খাওয়ার কথা বলেছেন তিনি। তবে কৃত্রিম মিষ্টি (আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার) ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন, কারণ এটি আমাদের অন্ত্রের জীবাণু নষ্ট করতে পারে এবং চিনির প্রতি আসক্তি পুরোপুরি দূর করে না।

তৃতীয় কৌশলটি হলো ‘মাইন্ডফুল ক্রেভিংস’ বা ইচ্ছাকৃতভাবে মিষ্টি খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা অনুভব করা। যখনই চিনি খাওয়ার ইচ্ছে হবে, তখন নিজেকে প্রশ্ন করুন – ‘আমার কি সত্যিই খিদে পেয়েছে, নাকি আমি শুধুই মুখের স্বাদের জন্য কিছু চাইছি?’

চতুর্থ ধাপটি হলো ‘স্মার্ট শপিং’। যখন বাজারে যাবেন, তখন পণ্যের লেবেল ভালো করে দেখুন। প্রতি ১০০ গ্রামে ৫ গ্রামের কম চিনি আছে এমন পণ্য বেছে নিন। কারণ, চিনির প্রতি আমাদের আসক্তির বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত আসলে বাজারেই নেওয়া হয়ে যায়, রান্নাঘরে নয়।

সবশেষে, তিনি পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রোটিনই হলো চিনির আসক্তি কমানোর মূল মন্ত্র। যদি আপনার খাবার পেট ভরানো এবং সুষম না হয়, তবে বারবার মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা হবেই। তাই খাবারের শুরুতে প্রোটিন রাখুন। ডিম, পনির, মাছ বা চিকেন হতে পারে আদর্শ বিকল্প।

ডাঃ রূপি জোর দিয়ে বলেন, চিনি ছাড়ার কোনো শর্টকাট নেই। এটি আসলে একটি লাইফস্টাইল পরিবর্তন। ছোট ছোট পদক্ষেপ এবং প্রতিদিনের অভ্যাসই এই কঠিন কাজটি সহজ করে তুলতে পারে। আপনার মনে কি এখনো কোনো প্রশ্ন আছে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *