পুজোর আগেই ভয়ঙ্কর সতর্কতা! শিশুদের নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরোলে কী হতে পারে জানেন? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

পুজোর মুখে শহরে বাড়ছে আতঙ্ক। জ্বর, মারাত্মক গলাব্যথা আর শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে উপচে পড়ছে শিশুদের ভিড়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রেসপিরেটরি সিনশিটিয়াল ভাইরাস বা RSV-এর দাপটে শিশুদের ফুসফুস মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে, যার ফলে অনেককে PICU-তেও ভর্তি করতে হচ্ছে। কলকাতার প্রায় সব সরকারি হাসপাতালেই এখন একই চিত্র। এনআরএস, কলকাতা মেডিকেল কলেজ, এসএসকেএম এবং ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি শিশুদের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মূল কারণ হলো তাপমাত্রার আকস্মিক পরিবর্তন। রোদের পর হঠাৎ বৃষ্টি এই ভাইরাসের জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করছে। যেহেতু শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাই তারা সহজেই এর শিকার হচ্ছে। সাধারণ সর্দি-জ্বর দিয়ে শুরু হলেও, সময়মতো চিকিৎসা না হলে এটি ব্রঙ্কিওলাইটিস বা নিউমোনিয়ায় পর্যন্ত গড়াতে পারে।

ঠিক যখন দুর্গাপূজা দরজায় কড়া নাড়ছে, তখন এই ভাইরাস পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পুজোর সময়ও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রখ্যাত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অপূর্ব ঘোষ জানিয়েছেন, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে খুব দ্রুত এই ভাইরাস ছড়ায়। তিনি অভিভাবকদের অনুরোধ করছেন, কেবল নিজেদের আনন্দের জন্য শিশুদের দমবন্ধ করা ভিড়ে নিয়ে না যেতে। নামী পুজোগুলোতে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত যে প্রচণ্ড ভিড় হয়, সেখানে শিশুরা সহজেই সংক্রমিত হতে পারে। ডা. ঘোষের কথায়, “ওই ভিড়ের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ভাইরাসযুক্ত কেউ থাকলে দ্রুত তা শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।”

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. দিব্যেন্দু রায়চৌধুরি বলেছেন, অনেক শিশুর ওপর একসঙ্গে RSV এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস আক্রমণ করছে। ফলে শ্বাসকষ্টের মাত্রা এতটাই বেড়ে যাচ্ছে যে অনেক সময় হাই ফ্লো অক্সিজেন বা নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হচ্ছে। তিনি সতর্ক করেছেন, যদি বাচ্চার জ্বর তিন দিনের বেশি থাকে বা সে ঝিমিয়ে পড়ে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, যদি একান্তই শিশুকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে যেতে হয়, তবে কোনো ধরনের ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রিম খাওয়ানো যাবে না। পর্যাপ্ত জল পান করানো জরুরি এবং বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে সঙ্গে ছাতা রাখা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে বাইরের স্ট্রিট ফুড থেকে শিশুদের দূরে রাখারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *