পাওয়ার লোভে কালো জাদু, হোটেলকে বানাল ‘কালো টাকার কারখানা’! কী ভাবে চলত প্রতারণা? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

টাকা কে না চায়? খুব কম সময়ে বিনা পরিশ্রমে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন অনেকেই দেখেন। এই লোভের সুযোগ নিয়ে একদল প্রতারক এমনই এক ফাঁদ পেতেছিল, যেখানে টাকার বৃষ্টি তো হতোই না, উল্টে হারাতে হতো নিজের সব সঞ্চয়। মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগরে টাকার লোভ দেখিয়ে চলছিল এক মারাত্মক কালো জাদুর খেলা।

শহরের পুলিশ কমিশনার প্রবীণ পাওয়ারের কাছে একটি গোপন সূত্রে খবর আসে, শহরের একটি বিলাসবহুল হোটেলে বেশ কিছু সন্দেহভাজন লোক দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। তাদের কার্যকলাপ রহস্যজনক। খবর ছিল, তারা নাকি কুসংস্কার এবং জালিয়াতির এক মারাত্মক খেলায় যুক্ত। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কমিশনার তাঁর সেরা দলটিকে এই রহস্য ভেদ করার দায়িত্ব দেন।

ইনস্পেক্টর সম্ভাজী পাওয়ার তাঁর দল নিয়ে সেই হোটেলে হানা দেন। পুলিশ হোটেলের ৩০৫ নম্বর ঘরে পৌঁছতেই সেখান থেকে এক ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করে, যার নাম বিকাশ উত্তরওয়ার। সে নিজেকে একজন তান্ত্রিক বাবা পরিচয় দেয়। একই সঙ্গে ৪১২ নম্বর ঘরে তার আরও দুই সঙ্গী—বিলাস কোহিলে ও শঙ্কর কাজালেকে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে বিলাস বৈজাপুর তহসিলের জুরুদ গ্রামের বাসিন্দা, আর শঙ্কর ছত্রপতি সম্ভাজিনগরের চিকলথানার বাসিন্দা। এই তিনজন মিলে এমন এক জালিয়াতির চক্র তৈরি করেছিল, যেখানে মানুষ টাকার লোভে নিজের সর্বস্ব খুইয়ে ফেলত।

পুলিশ যখন ঘরগুলো তল্লাশি করে, তখন অবাক হয়ে যায়। টেবিলের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল নকল নোট, সিঁদুরের কৌটো, শুকনো শিকড় এবং শুকনো নারকেল। এই সমস্ত জিনিস সেইসব ভণ্ডামি ভরা ‘কালো জাদুর’ অংশ ছিল, যা দিয়ে তারা সহজ-সরল মানুষকে ঠকাত। ‘একবার এই যাদু করলেই আকাশ থেকে টাকার বৃষ্টি হবে’—এই প্রতিশ্রুতি দিয়েই তারা সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলত। তদন্তকারী দলের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, ‘এই প্রতারকরা এমন একটি ভণ্ডামিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করত, যাতে মানুষ তাদের কথায় বিশ্বাস করে নিজেদের সব সঞ্চয় তাদের হাতে তুলে দিত।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *