জীবিত থাকতেও কেন নিজের পরিবারের পিণ্ডদান করেন নাগা সাধুরা? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

নাগা সাধুদের নিয়ে রহস্যের অন্ত নেই। তাদের জীবনযাপন, আচার-আচরণ এবং কঠোর নিয়মকানুন সাধারণ মানুষকে বিস্মিত করে তোলে। নাগা সাধু হওয়া কোনও সহজ কাজ নয়, বরং এর জন্য প্রয়োজন কঠিন প্রশিক্ষণ ও আত্মত্যাগ, যা সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের চেয়েও অনেক বেশি কঠোর। তাদের এই বিচিত্র দুনিয়া এবং কিছু অজানা নিয়মকানুন নিয়েই এই প্রতিবেদন।

নাগা সাধু হওয়ার প্রথম ধাপ

একজন সাধারণ মানুষ থেকে নাগা সাধু হওয়ার প্রক্রিয়া বেশ কঠিন। এই পথ বেছে নেওয়ার আগে ব্যক্তিকে কঠোরভাবে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং চমকপ্রদ নিয়ম হলো, একজন সাধুকে তার জীবিত পরিবারের সদস্যদের পিণ্ডদান করতে হয়। এই কাজটি করার পর তার কাছে পুরো বিশ্বই নিজের পরিবার হয়ে ওঠে। পরিবারের প্রতি এই দায়িত্ব পালনের পর সাধু তার সমস্ত পার্থিব সম্পর্ক ছিন্ন করে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন।

কামনা জয় করার কঠিন পরীক্ষা

নাগা সাধুদের জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিজেদের কামনাকে জয় করা। যেহেতু তারা দিগম্বর অবস্থায় থাকেন, তাই এই কাজটি তাদের জন্য একটি কঠোর তপস্যা। কামশক্তিকে দমন করে তাকে সঠিক পথে চালিত করা নাগা সাধুদের সাধনার একটি বড় অংশ। দীর্ঘ বছর ধরে হিমালয়ের মতো দুর্গম স্থানে কঠোর তপস্যা করে তারা এই শক্তি অর্জন করেন।

ভূত ও ভবিষ্যৎ দেখার অলৌকিক ক্ষমতা

অনেকের মতে, নাগা সাধুদের এমন ক্ষমতা আছে যে তারা একজন মানুষের অতীত ও ভবিষ্যৎ দেখতে পারেন। যদিও তারা সাধারণত এই ক্ষমতা প্রকাশ করেন না, তবে কারও প্রতি সন্তুষ্ট হলে তাকে সাহায্য করেন। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, নাগা সাধুদের দর্শন পেলে নাকি বহু জন্মের পাপ দূর হয়ে যায়।

ভস্ম ও রুদ্রাক্ষের রহস্য

নাগা সাধুদের শক্তির উৎস হিসেবে তাদের গায়ে মাখা ভস্ম এবং রুদ্রাক্ষের মালাকে মনে করা হয়। এই ভস্ম অনেক সময় শ্মশানের ছাই থেকে সংগ্রহ করা হয় অথবা বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয়। তাদের রুদ্রাক্ষের মালাগুলো খুবই শক্তিশালী ও খাঁটি হয়, যা তাদের সমস্ত নেতিবাচক শক্তি থেকে দূরে রাখে।

নাগা সাধুদের জীবন ত্যাগের এক অনন্য উদাহরণ। কঠোর তপস্যার মাধ্যমে তারা যে জীবন বেছে নেন, তার মূল উদ্দেশ্য হলো আধ্যাত্মিক মুক্তি। যদি কখনো কোনো নাগা সাধুর দেখা পান, তবে তাদের আশীর্বাদ নিতে ভুলবেন না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *