পিরিয়ড হলে কি নবরাত্রির পূজা আসাম্পূর্ণ থাকে? শাস্ত্র কী বলছে, জেনে নিন – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
নবরাত্রিতে পিরিয়ড হলে কি পূজা নষ্ট হয়ে যায়?
শীতল ষষ্ঠী থেকে শুরু হয়েছে শারদীয়া নবরাত্রি। দেবীপক্ষের এই সময়টায় মা দুর্গার নয়টি রূপের পূজা করা হয়। মা-কে সন্তুষ্ট করতে অনেকেই এই নয় দিন উপবাস রাখেন, ঘট স্থাপন করেন এবং অখণ্ড দীপ প্রজ্জ্বলিত করেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এই সময়টায় কঠোর নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলেন। কিন্তু যদি নবরাত্রির মাঝে হঠাৎ পিরিয়ড শুরু হয়, তাহলে কি পূজা ব্যর্থ হয়? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই ঘুরপাক খায়।
শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা কী?
গরুড় পুরাণ এবং যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতি-তে এই বিষয়ে উল্লেখ পাওয়া যায়। শাস্ত্র অনুযায়ী, মাসিক চলাকালীন নারীদের বিশ্রাম নেওয়া উচিত এবং সরাসরি কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা ভালো। এই সময় মূর্তি স্পর্শ করা, পূজার উপকরণ নিবেদন করা বা সরাসরি যজ্ঞের মতো কাজে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ বলে মনে করা হয়। পিরিয়ডকে সাধারণত অপবিত্র বলে গণ্য করা হয়, তাই পূজার স্থান থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আধুনিক দৃষ্টিকোণ কী বলে?
আধুনিক ধারণা অনুযায়ী, পিরিয়ডকে একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়, কোনো অপবিত্র বিষয় হিসেবে নয়। তাই অনেক আধুনিক চিন্তাভাবনা মনে করে, শারীরিক অবস্থার চেয়ে ভক্তিভাবই আসল। পূজাকে শারীরিক অবস্থার সঙ্গে না জুড়ে মনের ভক্তির সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
পিরিয়ড চলাকালীন কী করবেন?
যদি নবরাত্রির মাঝে পিরিয়ড শুরু হয়, তাহলে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা যেতে পারে।
১. যদি নবরাত্রির মাঝখানে পিরিয়ড শুরু হয়, তাহলে নয় দিনের উপবাসের পরিবর্তে অষ্টমীর মতো গুরুত্বপূর্ণ তিথিগুলিতে উপবাস রাখতে পারেন।
২. নয় দিনের উপবাসের সংকল্প ত্যাগ না করে আপনি শুধু ফল বা অন্য নিরামিষ আহার গ্রহণ করে উপবাস সম্পন্ন করতে পারেন। দূর থেকে আরতি শুনতে পারেন বা মানসিক জপ করতে পারেন।
৩. পিরিয়ডের সময় অনেক নারীরই শারীরিক দুর্বলতা বা ব্যথা থাকে। এমন পরিস্থিতিতে শরীরকে কষ্ট দিয়ে উপবাস বা কঠিন সাধনা করার কোনো প্রয়োজন নেই। শরীর সুস্থ না থাকলে শুধু মানসিকভাবেই মায়ের স্মরণ করা যথেষ্ট।