গুপ্তধনের পাহাড় বিলিয়ে দেবেন বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী! ল্যারি এলিসনের এই দান কেন সম্পূর্ণ আলাদা? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
মাত্র কয়েক বছর আগেও তার নামটি সম্ভবত অনেকের কাছেই অপরিচিত ছিল, কিন্তু এখন তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় ধনীতম ব্যক্তি। ইলন মাস্কের ঠিক পরেই যার অবস্থান, সেই ওরাকল-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন এবার এক চমকপ্রদ ঘোষণা করেছেন—জীবদ্দশাতেই তিনি তার সম্পদের সিংহভাগ দান করে দেবেন। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, এলিসনের বর্তমান সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩৭৩ বিলিয়ন ডলার, যা এসেছে মূলত ওরাকলের শেয়ার এবং টেসলায় তার বড় বিনিয়োগ থেকে।
২০১০ সালে বিল গেটস এবং ওয়ারেন বাফেট-এর “গিভিং প্লেজ” উদ্যোগে যোগ দিয়েই এলিসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তার মোট সম্পদের অন্তত ৯৫ শতাংশ দান করা হবে। সেই প্রতিশ্রুতি তিনি এখনও বজায় রেখেছেন। তবে তার দানের পদ্ধতি অনেকের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ল্যারি এলিসনের দাতব্য কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে Ellison Institute of Technology (EIT)-এর মাধ্যমে। এই প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হলেও স্বাস্থ্যসেবা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণার কাজ করে।
ক্যালিফোর্নিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়াকে ২০০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান, অথবা একসময় Ellison Medical Foundation-এ ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ—এলিসনের দাতব্য কাজের উদাহরণ। তবে তার এই পদ্ধতি নিয়ে বিতর্কও কম নয়। সমালোচকরা বলছেন, দাতব্য কাজের সঙ্গে লাভের ভাবনা মিশিয়ে ফেলা সবসময় সহজ নয়। অন্যদিকে, তার সমর্থকরা মনে করেন, এলিসনের মতো ব্যবসায়িক দূরদর্শিতাসম্পন্ন একজন মানুষের অর্থনৈতিক শক্তিই বিশ্বব্যাপী বড় বড় সমস্যার সমাধানে সহায়ক হতে পারে।
সাম্প্রতিককালে তার প্রতিষ্ঠিত EIT-তে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। খ্যাতনামা বিজ্ঞানী জন বেলকে প্রধান গবেষক হিসেবে নিয়োগ দিলেও মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করেন। বেল জানিয়েছিলেন, এই প্রকল্পটি “অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং”। তবে এসব বিতর্কের মধ্যেও ল্যারি এলিসনের ঘোষণা স্পষ্ট—তার বিপুল সম্পদের বড় অংশ শেষ পর্যন্ত সমাজের কল্যাণেই ব্যবহার হবে। পৃথিবীর ইতিহাসে দাতব্য কাজের ক্ষেত্রে তার এই অঙ্গীকার নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে।