বাজার ধসে উধাও ৬.৭৩ লাখ কোটি, শেয়ার পতনের নেপথ্যে ৩ বড় ধাক্কা! আসলে কী ঘটল? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ভারতীয় শেয়ার বাজারের জন্য ছিল এক চরম চ্যালেঞ্জের দিন। একটানা ষষ্ঠ সেশনে বড়সড় ধাক্কা খেল বাজার, যার ফলস্বরূপ বিনিয়োগকারীদের পকেট থেকে উধাও হয়ে গেল প্রায় ৬.৭৩ লাখ কোটি টাকা। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (BSE) সেনসেক্স ৭৩৩ পয়েন্ট গড়িয়ে ৮০,৪২৬ স্তরে বন্ধ হয়, অন্যদিকে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (NSE) নিফটি-৫০ ২৩৬ পয়েন্টের পতনে ২৪,৬৫৫-এ থেমেছে। কিন্তু হঠাৎ কেন এত বড় পতন? বিশেষজ্ঞরা এর পিছনে তিনটি প্রধান কারণের উল্লেখ করেছেন, যা বাজারের উপর গভীর চাপ সৃষ্টি করেছে।


১. মার্কিন ট্যারিফের আঘাত, কাঁপছে ফার্মা শিল্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের উপর নতুন ট্যারিফ আরোপের ঘোষণায় ভারতীয় ফার্মা সেক্টরে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ভারত থেকে ওষুধের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ (প্রায় এক-তৃতীয়াংশ) আমেরিকায় রপ্তানি হয়। এই সিদ্ধান্তের জেরে সূর্য ফার্মা ও ডক্টর রেড্ডিজ ল্যাবসের মতো বড় সংস্থার শেয়ার ২% থেকে ৫% পর্যন্ত পড়ে যায়। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে একটি ইতিবাচক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এই সেক্টরটি চাপের মুখে থাকবে।


২. এইচ-১বি ভিসা ফি বৃদ্ধি, আইটি সেক্টরে দুর্বলতা

মার্কিন প্রশাসন সম্প্রতি এইচ-১বি ভিসার ফি ১,০০০ ডলার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি (IT) স্টকগুলির জন্য বড় ধাক্কা। ভারত এই ভিসার প্রায় ৭০% ব্যবহার করে। ফলস্বরূপ, টিসিএস, ইনফোসিস, টেক মাহিন্দ্রা এবং এইচসিএল টেকনোলজিসের মতো প্রধান আইটি সংস্থাগুলির শেয়ার টানা ছয় দিন ধরে পতনের মুখে। এই ধাক্কা নিফটির সামগ্রিক পারফরম্যান্সেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

৩. ‘ফেড’ সুদের হার কমানোর আশা ক্ষীণ

মার্কিন জিডিপির (GDP) ইতিবাচক তথ্য সামনে আসার পর ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা অনেকটাই কমে গেছে। অক্টোবর ও ডিসেম্বরে সুদের হার কমানোর যে সম্ভাবনা ছিল, তা এখন যথাক্রমে ৮৭% এবং ৬২%-এ নেমে এসেছে, যা আগে ছিল ৯১% এবং ৭৬%। ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল স্পষ্ট করেছেন, সুদের হার খুব তাড়াতাড়ি কমালে মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্য পূরণ নাও হতে পারে। আবার, দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ হার বজায় রাখলে শ্রম বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফেডের এই মিশ্র বার্তাই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *