সাবেক মন্ত্রীর ছেলের মৃত্যু রহস্য, বাবা-স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পর্ক’ ও অত্যাচারের অভিযোগ – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

পাঞ্জাবের সাবেক কংগ্রেস মন্ত্রী রাজিয়া সুলতানার ছেলে আকিল আখতারের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। ৩৩ বছর বয়সী আকিল গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পঞ্চকুলার বাসভবনে মারা যান। প্রাথমিকভাবে এটিকে ড্রাগ ওভারডোজ বা ওষুধের জটিলতা বলা হলেও, তাঁর মৃত্যুর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একাধিক ভিডিওতে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে আসায় ঘটনাটি নতুন মোড় নিয়েছে।

ভিডিওতে আকিল আখতার অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা ও পাঞ্জাবের সাবেক ডিজিপি মহম্মদ মুস্তাফা এবং তাঁর স্ত্রীর মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় পাচ্ছিলেন। আকিলের দাবি, তাঁর মা রাজিয়া সুলতানা ও বোনও এই ষড়যন্ত্রে জড়িত।

মৃত্যুর আগে রেকর্ড করা ভিডিওতে তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাঁকে ‘মানসিক রোগী’ প্রতিপন্ন করার চেষ্টা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে জোর করে রিহ্যাবে পাঠিয়েছিলেন, যদিও তিনি মাদকমুক্ত ছিলেন। তাঁর টাকা ও ব্যক্তিগত নথিও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, যাতে তিনি কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে না পারেন। ভিডিওতে আকিল আকুল আবেদন করে বলেন, “কেউ আমার সাহায্য করুন, কেউ আমাকে বাঁচান।”

তবে, দ্বিতীয় একটি ভিডিওতে আকিল তাঁর আগের অভিযোগ থেকে সরে এসে বলেন, তিনি সিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছিলেন এবং তাঁর সব অভিযোগ অসুস্থতাজনিত ছিল। কিন্তু ভিডিওর শেষাংশে আকস্মিক সুর পাল্টে তিনি বলেন, “এরা কি আমাকে মেরে ফেলবে? এরা সবাই হারামজাদা।” এই বক্তব্যের হঠাৎ পরিবর্তন তদন্তকারী পুলিশকে ধন্দে ফেলেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিওগুলি প্রকাশ্যে আসার পর পঞ্চকুলা পুলিশ খুনের মামলা দায়ের করেছে। শামসুদ্দিন নামের পরিবারের এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে আকিলের বাবা মহম্মদ মুস্তাফা, মা রাজিয়া সুলতানা, স্ত্রী এবং বোনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। এই মামলার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) গঠন করা হয়েছে।

পাঞ্জাবের রাজনীতিতে প্রভাবশালী এই পরিবারের এমন ঘটনায় ক্ষমতার অপব্যবহার, ষড়যন্ত্র ও মানসিক নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। রাজিয়া সুলতানা মালেরকোটলা থেকে কংগ্রেসের সাবেক বিধায়ক এবং মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর স্বামী মহম্মদ মুস্তাফা পাঞ্জাব পুলিশের সাবেক ডিজিপি। এই মামলার তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *