চাঁদের বিলে ২৫ বছরে পদার্পণ কালীপুজো, মাছের ভোগে ঐতিহ্যের ছোঁয়া – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

দীপান্বিতা অমাবস্যায় আলোর উৎসবের মাঝে শ্যামা মায়ের আরাধনায় মেতে উঠেছে পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের বাঁশদহ ও চাঁদের বিল এলাকার মানুষজন। বিশেষত নাদন ঘাট থানার বিদ্যানগর ও সমুদ্রগড় পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই চাঁদের বিলের কালীপুজোর ঐতিহ্য এবার ২৫ বছরে পদার্পণ করল। এই পুজোয় মা কালীকে বারো রকমের চুনো মাছের পদ দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়।

একসময় এই বিল থেকে মাছ ধরে এবং বিল সংলগ্ন জমিতে চাষাবাদ করে বহু মৎস্যজীবী ও কৃষক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করত। ধীরে ধীরে বিল মজে যাওয়ায় এবং কচুরিপানায় ঢেকে যাওয়ায় মৎস্যজীবীদের জীবনে চরম সমস্যা দেখা দেয়। সেই সময়, ২০০১ সালে মৎস্যজীবী ও চাষীদের পাশে দাঁড়ান এলাকার বর্তমান বিধায়ক এবং রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি মন্ত্রী বা বিধায়ক না হওয়া সত্ত্বেও নিজের উদ্যোগে বিল সংস্কার এবং মৎস্য-কৃষি বাঁচানোর লক্ষ্য নিয়ে এই চুনো বিলে কালীপুজো শুরু করেন।

পরবর্তীকালে বিল সংস্কার হওয়ায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং মৎস্যজীবীদের জীবিকা নির্বাহের পথ আবার সুগম হয়। সেই সময় থেকে চলে আসা এই পুজো আজ ২৫ বছরে পা দিল। এই পুজোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে মাকে মৌরালা, শোল, খোলসে, পুটি, কই, টেংরা, বেলে, চাঁদা সহ বারো প্রকার মাছের ভোগ নিবেদন করা হয়। মাছের পাশাপাশি কাঁকড়ার ভোগও দেওয়া হয়। মইয়ের সাহায্যে মাছের ভোগ মায়ের মন্দিরে নিয়ে আসা হয় এবং মন্দির প্রাঙ্গণ মাছ ধরার জাল সহ নানা সরঞ্জাম দিয়ে সাজানো থাকে।

কথিত আছে, এই বিলের নাম ‘চাঁদের বিল’ হয়েছে কারণ চাঁদ সওদাগরের সপ্তডিঙ্গা এখানেই ডুবে গিয়েছিল। বিল সংস্কার করে এলাকার মৎস্যজীবীদের জীবিকা নির্বাহের পথ সুগম করা এবং চাষের জন্য পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যেই এই পুজো শুরু করেছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। খড়ের ছাউনি দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে এখানে একটি সুদৃশ্য মন্দির তৈরি হয়েছে। এই বছর পূজোর শুভ সূচনা করেন জেলাশাসক আয়েশা রানী এ। তিনি ফিতে কেটে ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে ২৫তম বর্ষের পুজোর উদ্বোধন করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *