এআইও এখন ভুলে ভরা! ফেক কনটেন্ট খেয়ে বুদ্ধি গেল কোথায়? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

এআই ব্রেন রট

এখন আর শুধু মানুষের নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এরও ‘ব্রেন রট’ হতে পারে। সম্প্রতি কর্নেল ইউনিভার্সিটি এক গবেষণায় এই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে। এই গবেষণা অনুযায়ী, নিম্নমানের, ভিত্তিহীন বা বিভ্রান্তিকর ইন্টারনেট ডেটা দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে বৃহৎ ভাষা মডেল (এলএলএম)-এর যুক্তি ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যখন একটি এআই মডেলকে ক্রমাগত এক্স (পূর্বে টুইটার)-এর মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে ‘ভাইরাল’ বা ‘ক্লিকবেট’ যুক্ত পোস্ট দেখানো হয়, তখন তার কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। পরীক্ষার পর দেখা যায়, এআই-এর যুক্তি সক্ষমতা (ARC টেস্ট) ৭৪.৯ থেকে কমে ৫৭.২-এ নেমে এসেছে। একইভাবে, দীর্ঘ প্রেক্ষাপট বোঝার ক্ষমতাও (RULER টেস্ট) ৮৪.৪ থেকে ৫২.৩-এ নেমে আসে।

নেতিবাচক আচরণে পরিবর্তন

এই ধরনের ‘জাঙ্ক ডেটা’-তে অভ্যস্ত হওয়ার ফলে এআই-এর মধ্যে নেতিবাচক আচরণগত পরিবর্তনও লক্ষ্য করা গেছে। মডেলটি তार्किक প্রক্রিয়া এড়িয়ে গিয়ে ভুল বা আসাম্পূর্ণ উত্তর দিতে শুরু করে, যাকে ‘থট-স্কিপিং’ বলা হচ্ছে। আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, এর মধ্যে অহংকার ও সাইকোপ্যাথিক প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, অন্যদিকে সহযোগিতা ও দায়িত্বশীলতার মতো গুণাবলি কমে যায়।

গবেষকদের মতে, নিম্নমানের ডেটার প্রভাব এত গভীর যে পরে উচ্চমানের ডেটা দিয়ে প্রশিক্ষণ দিলেও সেই ক্ষতি পুরোপুরি দূর করা কঠিন।

ভবিষ্যতের জন্য সতর্কতা

এই গবেষণা এক গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা জারি করেছে। ইন্টারনেট জুড়ে ভুয়ো ও চাঞ্চল্যকর তথ্যের ভিড়ে এআই মডেলকে ‘পরিষ্কার’ ডেটা সরবরাহ করা এখন জরুরি চ্যালেঞ্জ। গবেষকরা প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে ডেটা সংগ্রহের প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন। কেবল ইন্টারনেট থেকে ডেটা সংগ্রহ করাই যথেষ্ট নয়, এআই-কে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি থেকে বাঁচাতে এখন ডেটা মান নিয়ন্ত্রণ, ফিল্টারিং পদ্ধতি এবং ডেটা বৈধকরণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *