মাত্র ₹২০০-৩০০ খরচে বছরে ১০টি টেস্ট, ক্যান্সার-সহ কঠিন রোগ ধরা পড়বে শুরুতেই! ডাক্তারের জরুরি পরামর্শ – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

ক্যান্সারের মতো জীবনঘাতী রোগকে প্রাথমিক পর্যায়েই মোকাবিলা করার জন্য সময়মতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক সময় লক্ষণ ছাড়াই শরীরে নীরবে ক্যান্সার বাসা বাঁধে। রোগ ধরা পড়ার সময় যখন আসে, তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে গেছে। তাই ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাঃ তরঙ্গ কৃষ্ণ পরামর্শ দিয়েছেন যে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকেরই বছরে অন্তত একবার কিছু প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত।

ডাঃ কৃষ্ণ বলেন, বছরে একবার এই পরীক্ষাগুলো করালে শরীরে কোনো সমস্যা শুরু হওয়ার আগেই তা চিহ্নিত করে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয়ই জীবন বাঁচানোর সবচেয়ে বড় সুযোগ।

এই পরীক্ষাগুলি একেবারেই ব্যয়বহুল নয়, প্রায় ১০০ থেকে ২০০ টাকা বা তার কাছাকাছি খরচেই করা সম্ভব। নিয়মিত এই স্ক্রিনিং করালে রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে, ফলে চিকিৎসা সহজ হয়, খরচ কমে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকে।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সকলের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা নিচে দেওয়া হলো:

  • CBC (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট): রক্তস্বল্পতা, শরীরে সংক্রমণ বা প্রদাহের প্রাথমিক লক্ষণ জানতে এই পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। এটি রক্তে শ্বেতকণিকা ও প্লেটলেটসের সংখ্যাও জানিয়ে দেয়। ২৫ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের জন্য এটি বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়।
  • LFT (লিভার ফাংশন টেস্ট): এই পরীক্ষার মাধ্যমে লিভারের কার্যকারিতা জানা যায়। লিভারে কোনো সংক্রমণ, প্রদাহ বা অন্য রোগের শুরু হলে এটি সংকেত দেয়।
  • KFT (কিডনি ফাংশন টেস্ট): কিডনি শরীরের ফিল্টার মেশিন। এই পরীক্ষা কিডনির কর্মক্ষমতা যাচাই করে এবং ক্রিয়েটিনিন ও ইউরিয়ার মাত্রা দেখে কিডনি বিকল হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ দ্রুত শনাক্ত করতে সাহায্য করে।
  • থাইরয়েড প্রোফাইল: থাইরয়েড শরীরের শক্তি, ওজন, মেটাবলিজম এবং মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করে। এর মাত্রা কম বা বেশি হলে শরীরের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, যা আকস্মিক ওজন পরিবর্তন, ক্লান্তি, চুল পড়া বা হার্ট রেট প্রভাবিত করতে পারে।
  • লিপিড প্রোফাইল: এটি কোলেস্টেরল এবং হৃদরোগের ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য করা হয়। এতে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL), ভালো কোলেস্টেরল (HDL) এবং ট্রাইগ্লিসারাইডসের মাত্রা পরিমাপ করা হয়, যা হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি নির্ধারণে সহায়ক।

৪০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য বিশেষ ক্যান্সার মার্কার পরীক্ষা:

  • পুরুষদের জন্য:
    • PSA: প্রোস্টেট ক্যান্সারের প্রাথমিক ইঙ্গিত দেয়।
    • CA 19.9: অগ্ন্যাশয় (প্যানক্রিয়াটিক) ক্যান্সারের মার্কার।
    • CA 72.4: পাকস্থলীর (পেটের) ক্যান্সার শনাক্তকরণে সহায়ক।
  • মহিলাদের জন্য:
    • CA-125: ওভারিয়ান (ডিম্বাশয়) ক্যান্সার শনাক্তকরণে সাহায্য করে।
    • CA 15.3: স্তন ক্যান্সারের (ব্রেস্ট ক্যান্সার) প্রাথমিক মার্কার।
  • সবার জন্য সাধারণ মার্কার:
    • CEA: এটি একাধিক ক্যান্সারের জন্য সাধারণ একটি মার্কার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *