আপনার কি কিডনির সমস্যা হচ্ছে? যে ১০টি লক্ষণ দেখলে সাবধান হবেন, জানাচ্ছেন চিকিৎসক – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

কিডনি মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। রক্ত পরিশুদ্ধ করা, শরীরে ফ্লুইড বা জলের ভারসাম্য রক্ষা করা এবং মূত্রের মাধ্যমে ক্ষতিকারক টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়াই এর প্রধান কাজ। কিন্তু যখন কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, তখন এটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, এমনকি কখনও কখনও সেই ক্ষতি স্থায়ীও হতে পারে। সম্প্রতি মেটাবলিক এবং স্পোর্টস ফিজিও ডা. সুধাংশু রায় তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানিয়েছেন, কিডনির ওপর চাপ পড়লে শরীরে ঠিক কী কী সতর্কীকরণ লক্ষণ দেখা যায়, যা আমাদের উপেক্ষা করা উচিত নয়।

আসুন জেনে নেওয়া যাক, কিডনির ওপর স্ট্রেস পড়লে কী কী সাধারণ লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যা দ্রুত মনোযোগ আকর্ষণ করে:

  • ১. অস্বাভাবিক ক্লান্তি: কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে শরীরে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ জমতে শুরু করে, যা এনার্জি লেভেল কমিয়ে দেয় এবং তীব্র ক্লান্তি অনুভূত হয়।
  • ২. পা এবং চোখে ফোলা ভাব: কিডনির কার্যকারিতা কমলে শরীরে ফ্লুইড বা জলীয় পদার্থ টিস্যুতে জমা হতে থাকে। এর ফলেই পা ও চোখের চারপাশে ফোলা ভাব বা ফোলা দেখতে পাওয়া যায়।
  • ৩. প্রস্রাবে ফেনা বা বুদবুদ: যদি কিডনির ওপর চাপ পড়ে, তবে প্রস্রাবের মাধ্যমে প্রোটিন বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে। এই প্রোটিন লিকেজের কারণেই প্রস্রাবে ফেনা বা বুদবুদ দেখা যেতে পারে।
  • ৪. ঘন ঘন প্রস্রাব: কিডনি যখন প্রস্রাবের ভারসাম্য বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তখন রাতেও বারবার প্রস্রাব করার প্রয়োজন হতে পারে।
  • ৫. পিঠে ব্যথা বা একপাশে কাত হয়ে থাকা: পিঠের নিচের দিকে ব্যথা বা সামান্য কুঁজো হয়ে থাকার প্রবণতাও কিডনি বা কিডনিতে পাথর জমার প্রাথমিক সংকেত হতে পারে।
  • ৬. ত্বক শুষ্ক হওয়া ও চুলকানি: শরীরে খনিজ এবং টক্সিনের ভারসাম্যে গোলযোগ তৈরি হলে ত্বকে জ্বালা এবং অস্বাভাবিক চুলকানি দেখা যেতে পারে।
  • ৭. ক্ষুধা হ্রাস বা মুখে বিস্বাদ: টক্সিন জমা হওয়ার কারণে হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এর ফলস্বরূপ ক্ষুধামান্দ্য এবং মুখের স্বাদে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।
  • ৮. উচ্চ রক্তচাপ: কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।
  • ৯. বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া: শরীরে টক্সিন জমলে পেটে অস্বস্তি হয়, যার জেরে জি-মিছিলানো ভাব বা বমি হতে পারে।
  • ১০. শ্বাসকষ্ট: ফুসফুসে ফ্লুইড বা জল জমা হওয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হয় এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।

ডা. সুধাংশু রায় সতর্ক করে বলেন, কিডনি প্রতিদিন নীরবে নিজেদের কাজ করে যায়। এটি রক্ত পরিস্রাবণ, শরীরের ফ্লুইড ভারসাম্য রক্ষা এবং হৃদযন্ত্রকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। কিন্তু যখন কিডনির ওপর বেশি চাপ পড়ে, তখন শরীর আগেভাগেই সতর্কীকরণ লক্ষণ দেখাতে শুরু করে। তাই, এই লক্ষণগুলিকে কখনওই অবহেলা করা উচিত নয়।

চিকিৎসক পরামর্শ দিচ্ছেন, সঠিক সময়ে সতর্কতা অবলম্বন এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখলে কিডনিকে দীর্ঘকাল সুস্থ রাখা যায় এবং স্থায়ী ক্ষতি এড়ানো সম্ভব। এর জন্য তিনি সতেজ ও সুষম খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত জল পান (হাইড্রেশন) এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *