পুলিশ পরিচয়ে কেপমারি, সোনার গয়না হাতিয়ে চম্পট দিল ২ দুষ্কৃতী – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
পুলিশের ‘পিসি পার্টি’র সদস্য পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে থামানো হলো রাস্তায়। বলা হলো, এলাকায় ছিনতাই হয়েছে, চলছে চেকিং। এরপর রীতিমতো ডায়েরি বের করে নাম, ঠিকানা লেখা হলো, দেওয়া হলো সতর্কবার্তা। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই ঘটল এক চাঞ্চল্যকর প্রতারণা! চোখের পলকে স্কুটির ডিকি থেকে সোনার গয়না হাতিয়ে চম্পট দিল দুই দুষ্কৃতী। বরানগর সেন্ট্রাল মডেল স্কুল সংলগ্ন এলাকায় ঘটা এই কেপমারির ঘটনায় রীতিমতো প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে।
জানা গেছে, ৮৭, কাশীপুর রোডের বাসিন্দা রাজেন্দ্র সাউ বরানগর কালীতলা মাঠ সংলগ্ন এলাকায় হার্ডওয়্যারের দোকান চালান। গত ২১ অক্টোবর, সকাল ১০টা নাগাদ স্কুটিতে দোকান যাওয়ার পথে বরানগর সেন্ট্রাল মডেল স্কুল লাগোয়া রাস্তায় বুলেট বাইকে আসা দুই যুবক তাঁর পথ আটকায়। লম্বা-চওড়া চেহারার ওই যুবকেরা নিজেদের বরানগর থানার ‘পিসি পার্টি’র সদস্য বলে পরিচয় দেয় এবং জানায়, ওই রাস্তায় সকালে ছিনতাই হয়েছে।
এরপর এক যুবক ডায়েরি ও কলম বের করে রাজেন্দ্রবাবুর নাম-ঠিকানা লিখতে শুরু করে। অন্যজন গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করে। তারপরই তারা ব্যবসায়ীকে পরামর্শ দেয়, “এসব সোনা পরে রাস্তায় কেন বের হন? পরিস্থিতি ভালো নয়। গলার ও হাতের সোনার গয়না তাড়াতাড়ি খুলে স্কুটির ডিকিতে রাখুন।” তাদের কথায় কিছুটা রাজি হয়ে রাজেন্দ্রবাবু স্কুটি নিয়ে এগিয়ে যান।
তবে কয়েকশো মিটার যেতে না যেতেই দ্রুত গতিতে বাইকে এসে ওই দুই যুবক ফের তাঁর পথ আটকায়। এবার কার্যত হুমকির সুরে তারা বলে, “আপনি তো পুলিশের কথা শুনছেন না! এখনই গয়না খুলে ডিকিতে রাখুন।” বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ী গয়না খুলে ডিকিতে রাখতে গেলে তারা একটি সাদা খাম এগিয়ে দেয়। বলে, “এই খামে ঢুকিয়ে রাখুন।” এরপরেই ঘটে আসল কাণ্ড। হাতের কারসাজিতে সোনার গয়না-সহ আসল খামটি হাতিয়ে নিয়ে তারা পাথর ভরতি অন্য একটি খাম ডিকিতে ঢুকিয়ে দেয় এবং দ্রুত এলাকা থেকে চম্পট দেয়।
ব্যবসায়ী পরে খাম খুলে দেখেন, তাতে সোনার গয়নার বদলে রয়েছে কেবল পাথর! এরপরই তিনি বরানগর থানায় বিষয়টি জানান। পুলিশ তাঁকে সঙ্গে নিয়ে এলাকা পরিদর্শন ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। যদিও অভিযোগটি সরকারিভাবে নথিবদ্ধ হয়েছে ঘটনার কয়েক দিন পর, শনিবার। রাজেন্দ্রবাবু বলেন, “প্রতিদিন এই রাস্তায় যাতায়াত করি। সকাল ১০টায় এমনটা ঘটবে স্বপ্নেও ভাবিনি। আশা করছি, অপরাধীরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।” পুলিশের পোশাকের সুযোগ নিয়ে এমন অভিনব প্রতারণার ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।