ডেঙ্গুর ছোবলে এক মাসে একই পরিবারের ২ জনের মৃত্যু! ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: লক্ষ্মীপুজোর সময় ডেঙ্গুতে পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যুর এক মাস পেরোতে না পেরোতেই এবার একই মারণ রোগে মারা গেলেন অপর এক সদস্য। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের রেনিয়ায় এই জোড়া মৃত্যু এবং একই পরিবারের আরও দু’জনের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে, সর্দার পরিবার বাড়ির শিশুদের ভয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে।
জোড়া মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। রবিবার সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে স্থানীয়দের বিক্ষোভে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিকাশি ঠিকভাবে পরিষ্কার না করায় ডেঙ্গু মশার মারাত্মক বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। তাঁদের দাবি, অনেকেই ভয়ে এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। যদিও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবব্রত মণ্ডল এই দাবি মানতে নারাজ।
সর্দার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাত দিন আগে জ্বর নিয়ে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বন্দনাদেবী। রক্ত পরীক্ষায় তাঁর ডেঙ্গু ধরা পড়েছিল। হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছিল। তবে পরিবারের অভিযোগ, শনিবার বন্দনার মৃত্যুর পর হাসপাতাল ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘লিভার ফেলিওর’ উল্লেখ করেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় বন্দনাদেবীর মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছতেই স্থানীয়দের ক্ষোভ চরমে ওঠে। মৃতের স্বামী কল্যাণবাবু বলেন, “ছোট মেয়ে এখনও অসুস্থ। আমাদের বাড়ির আশপাশে অনেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এলাকা পরিষ্কার রাখার জন্য পুরসভাকে বারবার অনুরোধ করেও কোনো লাভ হয়নি। সবাই খুব আতঙ্কে রয়েছে।”
অন্যদিকে, কাউন্সিলর দেবব্রত মণ্ডল এবং রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস জানান, এলাকায় নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। জ্বরে আক্রান্তদের বাড়িতে গিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে তাঁদের অভিযোগ, ড্রেন সাফ করার পরও এলাকার মানুষ প্লাস্টিক, থার্মোকল ফেলায় জল বেরোতে পারছে না, যার ফলে জল জমে থাকছে। তাঁরা আরও জানান, অনেক বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক ভরে গিয়ে জল উপচে গলিতে নামছে, অথচ বাড়ির সদস্যরা পুরসভাকে জানাচ্ছেন না। তাই ট্যাঙ্ক চিহ্নিত করে পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জনগণকে সচেতন হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ও পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় রাজপুর-সোনারপুরের রেনিয়ায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে।