ঔষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস হবে ‘স্থায়ী’ কন্ট্রোল! সকালে শুধু এই ‘৫’ বিশেষ পানীয় পান করুন, জানুন কী আছে এই টোটকায় – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
রক্তে শর্করার মাত্রা যখন লাগামছাড়া হয়, তখন তা ধীরে ধীরে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। কিডনি, হৃদপিণ্ড, স্নায়ুতন্ত্র ও চোখের মতো অঙ্গগুলির ক্ষতি হতে থাকে। আধুনিক চিকিৎসায় এই রোগের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হলেও, তার মূল সমস্যা কিন্তু থেকেই যায়। কিন্তু জানেন কি, আয়ুর্বেদে এই পরিস্থিতিকে কেবল রোগ নয়, জীবনযাত্রার ভারসাম্যের অভাব হিসাবে দেখা হয়?
আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক জীবনশৈলী ও কিছু প্রাকৃতিক পানীয়ের ব্যবহার রক্তে শর্করার মাত্রা প্রাকৃতিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে গ্রহণ করা কয়েকটি পানীয় শরীরের ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়, যা সারাদিন রক্তে শর্করার স্তরকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাহলে কী আছে এই বিশেষ টোটকায়, যা ডায়াবেটিসকে সহজে বশে আনতে পারে? চলুন, জেনে নেওয়া যাক এমন পাঁচটি অসাধারণ আয়ুর্বেদিক পানীয়, যা মধুমেহ বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে অবিশ্বাস্য ফল।
মেথি ভেজানো জল
মেথির দানায় দ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যা হজমের সময় রক্তে গ্লুকোজ শোষণের গতি কমিয়ে দেয়। ফলে খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে। রাতে এক চামচ মেথি দানা এক গ্লাস জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই জল পান করা এবং ভেজানো দানাগুলি চিবিয়ে খাওয়া অত্যন্ত কার্যকরী। আয়ুর্বেদ অনুযায়ী, মেথি শরীরকে শীতল করে এবং শর্করার ভারসাম্য রক্ষা করে। নিয়মিত ব্যবহারে এটি কোলেস্টেরল কমায় ও হজম প্রক্রিয়াকেও উন্নত করে।
তেতো করলার রস
করলার মধ্যে ‘চ্যারন্টিন’ এবং ‘পলি-পেপটাইড-পি’ নামক উপাদান থাকে, যা ইনসুলিনের মতোই কাজ করে। এই যৌগগুলি শরীরে গ্লুকোজের ব্যবহার উন্নত করে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে টাটকা করলার রস পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। স্বাদ বদলের জন্য এই রসের সঙ্গে শসা বা টমেটোর রস মেশানো যেতে পারে। নিয়মিত এই পানীয় পান করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
দারচিনির জল
দারচিনিতে থাকা প্রাকৃতিক উপাদানগুলি ইনসুলিনের মতো ভূমিকা পালন করে। এটি কোষগুলিকে আরও কার্যকরভাবে গ্লুকোজ শোষণে সহায়তা করে, যার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে। রাতে এক চামচ দারচিনির গুঁড়ো জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই জল পান করলে শুধু শর্করা নয়, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ শরীরকে প্রদাহ থেকে রক্ষা করে।
আমলার রস (আমলকি)
আমলা বা আমলকি হল ভিটামিন সি-এর একটি দুর্দান্ত উৎস। এটি কেবল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় না, এটি অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষগুলিকে রক্ষা করে, যা ইনসুলিন তৈরির জন্য দায়ী। ডায়াবেটিসে এই কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। নিয়মিত আমলার রস পান করলে HbA1c-এর মাত্রা কমে, অক্সিডেটিভ চাপ হ্রাস পায় এবং শরীরের সূক্ষ্ম রক্তনালীগুলির স্বাস্থ্য উন্নত হয়। ফলে নেফ্রোপ্যাথি বা রেটিনোপ্যাথির মতো জটিলতা এড়ানো সম্ভব হয়।
ত্রিফলার জল
ত্রিফলা হল হরিতকী, বিভীতকী এবং আমলকীর একটি শক্তিশালী মিশ্রণ। এই তিনটি উপাদান শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। সকালে হালকা গরম জলে এক চামচ ত্রিফলা চূর্ণ মিশিয়ে পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়া এই পানীয়টি লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।