ঘরে সোনা রাখা নিয়ে মারাত্মক ভুল করছেন না তো? বিল ছাড়া কত সোনা থাকলে আয়কর হানা দেবে, জানুন চমকে যাওয়া নিয়ম! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

অনেকেই সোনা বা গয়না কেনার পর বিল ফেলে দেন। এটি একটি মারাত্মক ভুল। সোনা কেনার প্রমাণ হিসেবে বিল বা রসিদ রাখা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, যেকোনো সময় আয়কর আধিকারিকরা আপনার সোনা দেখলে তার উৎস বা রেকর্ড জানতে চাইতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিল দেখাতে না পারলে সেই সোনা বাজেয়াপ্ত হতে পারে।

কিন্তু, ধরুন মায়ের কাছ থেকে পাওয়া গয়না বা পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সোনা, সেগুলোর তো বিল থাকা সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় আইনে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করা হয়েছে। এই নিয়মগুলিই বলে দেয় যে, বিল বা রেকর্ড ছাড়াই একজন ব্যক্তি ঠিক কত পরিমাণ সোনা নিজের কাছে রাখতে পারবেন

রেকর্ড ছাড়া কে কতটা সোনা রাখতে পারবেন?

এই পরিমাণের সোনা থাকলে আপনাকে তার জন্য কোনো রেকর্ড বা প্রমাণ দেখাতে হবে না। আয়কর হানা হলেও আধিকারিকরা এই পরিমাণ সোনা বাজেয়াপ্ত করেন না। তবে, এর চেয়ে বেশি সোনা পাওয়া গেলে তার জন্য রেকর্ড চাওয়া হতে পারে অথবা সেটি কেনার মতো পর্যাপ্ত আয়ের উৎস দেখাতে বলা হতে পারে।

  • বিবাহিত মহিলা: ৫০০ গ্রাম সোনা
  • অবিবাহিত মহিলা: ২৫০ গ্রাম সোনা
  • পুরুষ: ১০০ গ্রাম সোনা

উদাহরণ হিসেবে, একটি ছয়জনের পরিবারে যদি বাবা, মা, ছেলে, বউমা, নাতি এবং নাতনি থাকেন— অর্থাৎ দুইজন বিবাহিত মহিলা, একজন অবিবাহিত মহিলা এবং তিনজন পুরুষ থাকেন, তবে এই পরিবারে কোনো রেকর্ডজনিত সমস্যা ছাড়াই মোট ১,৫৫০ গ্রাম (১.৫ কেজি-র বেশি) সোনা রাখা সম্ভব:

  • বিবাহিত মহিলা: ৫০০ গ্রাম $\times$ ২ = ১,০০০ গ্রাম
  • অবিবাহিত মহিলা: ২৫০ গ্রাম
  • পুরুষ: ১০০ গ্রাম $\times$ ৩ = ৩০০ গ্রাম
  • মোট: ১,৫৫০ গ্রাম

নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি সোনা থাকলে কী হবে?

যদি নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি সোনা আপনার কাছে থাকে এবং তার কোনো বৈধ রেকর্ড না থাকে, তবে আয়কর আধিকারিকরা নিম্নোক্ত হারে ট্যাক্স ধার্য করতে পারেন:

  • সোনার মূল্যের উপর ৬০% ট্যাক্স।
  • ট্যাক্সের উপর ২৫% সারচার্জ (যা সোনার মূল্যের প্রায় ১৫%)।
  • ট্যাক্স এবং সারচার্জের মোট পরিমাণের উপর ৪% সেস।

সবমিলিয়ে, সোনার মূল্যের প্রায় ৭৮% পর্যন্ত কর হিসেবে দিতে হতে পারে। যেমন, আপনার কাছে যদি ২ লক্ষ টাকার ‘অঘোষিত’ সোনা থাকে, তবে আপনাকে ১,৫৬,০০০ টাকা পর্যন্ত কর দিতে হবে।

আয়কর হানার সময় ধরা পড়লে আরও বড় বিপদ

যদি আপনার বাড়িতে আয়কর হানা (Income Tax Raid) হয় এবং সেই সময় বিলহীন অতিরিক্ত সোনা ধরা পড়ে, তবে উপরে বর্ণিত ট্যাক্সের পাশাপাশি আরও ১০% জরিমানা (Penalty) দিতে হবে। সেক্ষেত্রে, সোনার মূল্যের প্রায় ৮৮% পর্যন্ত টাকা আপনাকে কর ও জরিমানা হিসেবে পরিশোধ করতে হবে।

সোনা নিজে থেকে ‘ঘোষণা’ করা কেন নিরাপদ?

যদি আপনার কাছে রেকর্ড ছাড়া অতিরিক্ত সোনা থাকে, তবে আপনি নিজেই আয়কর বিভাগে তা ঘোষণা করার সুযোগ পান। এক্ষেত্রে কম হারে ট্যাক্স দিতে হয় এবং আপনার সোনাটি ‘বৈধ সম্পত্তি’ হিসেবে গণ্য হয়।

স্বেচ্ছায় ঘোষণা করলে:

  • ৩০% মূল ট্যাক্স
  • ১০% সারচার্জ
  • ৩% সেস

এভাবে মোট ৩৪% পর্যন্ত ট্যাক্স পরিশোধ করলে আপনার সোনা নিয়ে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *