এই পাঁচ দিনে গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, ৯৯% মানুষ এই ভুলটি করে – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

বহু দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও সন্তানের মুখ দেখতে পান না, আর এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো সঠিক সময়ে গর্ভধারণের চেষ্টার অভাব। বেশিরভাগ মানুষই জানেন না যে প্রতি মাসে কোন দিনগুলিতে প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা সবথেকে বেশি থাকে। ফলে, তারা সঠিক পরিকল্পনা করতে পারেন না এবং বারবার ব্যর্থ হন।

কিন্তু সত্যিটা হলো, প্রতি মাসে এমন কিছু দিন থাকে, যখন গর্ভধারণের সম্ভাবনা সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছয়। আর এই ‘সোনালি সময়’ না জানার কারণেই ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ ভুল করে বসেন।

ওভিউলেশন পিরিয়ডেই বাড়ে সম্ভাবনা

বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন মহিলার ওভিউলেশন পিরিয়ড বা ডিম্বস্ফোটনের সময়েই প্রেগন্যান্সির চান্স সবচেয়ে বেশি থাকে। এই সময়েই মহিলাদের ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু (এগ) নির্গত হয়, যা সাধারণত ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকরী থাকে। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা সর্বাধিক।

তবে এখানেই সমস্যা, কারণ প্রতিটি মহিলার ওভিউলেশন পিরিয়ড কিন্তু এক হয় না। এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট মহিলার মাসিক চক্রের (Menstrual Cycle) দৈর্ঘ্যের ওপর।

ওভিউলেশন পিরিয়ড জানবেন কীভাবে?

ওভিউলেশনের সময়কাল জানার সহজ উপায় রয়েছে। স্পার্ম বা শুক্রাণু একজন মহিলার শরীরে প্রায় ৫ দিন পর্যন্ত সজীব থাকতে পারে। তাই ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার ঠিক আগের পাঁচ দিন এবং নির্গত হওয়ার দিনটি হলো গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে অনুকূল সময়।

  • ২৮ দিনের নিয়মিত মাসিক চক্র: যাদের মাসিক চক্র ২৮ দিনের, তাদের ক্ষেত্রে পিরিয়ড শুরু হওয়ার ১৪তম দিনের আশেপাশে ওভিউলেশন হতে পারে। সেক্ষেত্রে পিরিয়ড শুরু হওয়ার ১০ম দিন থেকে ১৭তম দিনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হলে প্রেগন্যান্সির সর্বোচ্চ সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ, ওভিউলেশনের দুই বা তিন দিন আগেও সম্পর্ক স্থাপন করলে তা ফলপ্রসূ হতে পারে।
  • অন্যান্য চক্রের দৈর্ঘ্য: যদি মাসিক চক্র ২৮ বা ৩০ দিনের না হয়, তবে ওভিউলেশনের দিনটি পরিবর্তিত হবে।
    • ২১ দিনের চক্রে পিরিয়ডের পরে ৭ম দিনের আশেপাশে ওভিউলেশন হতে পারে।
    • ৩৫ দিনের চক্রে তা ২১তম দিনের আশেপাশে হতে পারে।

তাই ১৪ দিনের সাধারণ ফর্মুলাটি সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। সঠিক তারিখ বের করতে মাসিক চক্রের দিন সংখ্যা থেকে ১৪ দিন বিয়োগ করে ওভিউলেশনের সম্ভাব্য দিনটি খুঁজে নিতে হবে।

আরও কিছু উপায়ে ওভিউলেশন জানা সম্ভব

ওভিউলেশনের সঠিক তারিখ জানতে কিছু কিটও বাজারে পাওয়া যায়, যা ওভিউলেশন কিট নামে পরিচিত। এই কিটগুলি প্রস্রাবে থাকা লিউটিনাইজিং হরমোনের (LH) মাত্রা পরিমাপ করে। ওভিউলেশনের ঠিক আগে এই হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়।

এছাড়াও, ওভিউলেশনের সময় মহিলাদের শরীরের মূল তাপমাত্রা (Basal Body Temperature) সামান্য বৃদ্ধি পায়। কিছু মহিলার ক্ষেত্রে এই সময়ে স্তনেও কিছুটা পরিবর্তন অনুভূত হতে পারে। এই লক্ষণগুলি পর্যবেক্ষণ করেও সঠিক সময়টি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, সফল গর্ভধারণের জন্য দম্পতিদের নিজেদের মাসিক চক্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা এবং সঠিক সময়ে চেষ্টা করা জরুরি। ভুল ধারণা দূর করে বৈজ্ঞানিক তথ্য মেনে চললে মা-বাবা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *