ভারতের জন্য ১টি বড় সুখবর, আমেরিকা-চীন হতবাক! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস: বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তার মাঝেও এই অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। এর প্রধান কারণ হলো, বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য সংক্রান্ত উদ্বেগ এবং মার্কিন-চিন শুল্ক বৃদ্ধির মতো প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশের শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা ভারতের অর্থনীতিকে মজবুত ভিত দিয়েছে।

এসবিআই ক্যাপিটাল মার্কেটসের (এসবিআইক্যাপস) সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আমেরিকা-চিনের মতো বৃহৎ দেশগুলির মধ্যে যখন বাণিজ্য অনিশ্চয়তা এবং শুল্ক নিয়ে সংঘাত চলছে, তখন ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজার ও চাহিদা দেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ভরসা হিসেবে কাজ করছে। উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকা ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও ভারত তার অভ্যন্তরীণ বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দিয়েছে।

তাছাড়া, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির পক্ষ থেকে মূলধনী ব্যয় (Capital Expenditure) উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিনিয়োগ ও স্থায়ী মূলধন নির্মাণ আরও শক্তিশালী হয়েছে।

উৎসবের মরসুমে চাঙ্গা বাজার

দেশের বাজারে চাহিদা যে দ্রুতগতিতে বাড়ছে, তার প্রমাণ মিলছে উৎসবের মরসুমের বিক্রয়, জিএসটি-এর হারে পরিবর্তন এবং খুচরা বিক্রিতে জোরালো উত্থানে। কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (সিএআইটি)-এর তথ্য অনুযায়ী, এই বছর উৎসবের বিক্রি ৪.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। অটো এবং খুচরা বিক্রিতেও উৎসাহজনক বৃদ্ধি দেখা গেছে, যা ভারতের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যকে আরও মজবুত করেছে।

বৈশ্বিক চিত্র: ডলার ছেড়ে সোনা ও ডিজিটাল মুদ্রায় মনোযোগ

এসবিআইক্যাপসের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ব বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা ও শুল্ক বৃদ্ধি এখন ‘স্বাভাবিক’ ঘটনা। অগাস্ট ২০২৫-এ চিন থেকে আমেরিকায় রফতানি ৩৩ শতাংশ হ্রাস পেলেও, মোট শিপমেন্ট কিন্তু ৪.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেইন বা সরবরাহ শৃঙ্খলে একটি নতুন বিন্যাস তৈরি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক স্তরে এখন ডলারের বদলে সোনা এবং ডিজিটাল মুদ্রার দিকে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বাড়ছে, যা নিরাপদ বিকল্পের সন্ধান দিচ্ছে।

দেশীয় বিশ্বাসে ভরসা যোগাচ্ছে রিজার্ভ ব্যাংক

দেশীয় বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) ঋণ প্রবাহ সহজ করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। বড় ঋণগ্রহীতাদের জন্য নিয়মে শিথিলতা আনা এবং শেয়ার বাজারে ঋণের সীমা বৃদ্ধি তার মধ্যে অন্যতম। এর ফলস্বরূপ, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আংশিক পুঁজি তুলে নিলেও, দেশীয় বা গার্হস্থ্য বিনিয়োগকারীদের আস্থা কিন্তু দৃঢ় রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা, সরকারি বিনিয়োগ এবং সময়োপযোগী নীতির কারণে ভারত এই বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার সময়েও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে হাঁটছে। এই অভ্যন্তরীণ উৎসাহ বজায় থাকলে আগামী বছরগুলিতে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় ভারত নিজের স্থান আরও মজবুত করতে সক্ষম হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *