২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বছর আসছে ২০২৬! বিশ্বজুড়ে কী কী পরিবর্তন ঘটবে? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

২০২৬ সাল জ্যোতিষশাস্ত্রের ইতিহাসে এক বিরল পরিবর্তনের বছর হতে চলেছে, যা কিনা গত ১০০ বছরে এত শক্তিশালীভাবে দেখা যায়নি। বিরল গ্রহের অবস্থান এবং সূর্যের তীব্র শক্তির কারণে এই নতুন বছরটি বিশ্বজুড়ে এবং ব্যক্তিগত জীবনে বিশাল পরিবর্তনের সূচনা করবে বলে দাবি করছেন জ্যোতিষীরা।

নিউম্রোভানির (NumroVani) প্রধান জ্যোতিষী সিদ্ধার্থ এস কুমার (Sidhharrth S Kumaar)-এর মতে, “সংখ্যাশাস্ত্র অনুসারে, ২০২৬ সাল ১, ৮ এবং ২-এর শক্তি দ্বারা চালিত হবে। এই সংখ্যাগুলো নেতৃত্ব, কর্মফল (কার্মা) এবং ভারসাম্যের প্রতিনিধিত্ব করে। একসঙ্গে, তারা এমন এক শক্তিশালী মিশ্রণ তৈরি করবে যা আমাদের জীবনযাপন, নেতৃত্ব এবং সংযোগের পদ্ধতিকে আমূল বদলে দেবে।”

২০২৬ কেন এত বিশেষ?

জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, ২০২৬ সাল ব্যতিক্রমী হওয়ার প্রধান কারণ হলো, আকাশ এই বছর অবিশ্বাস্যভাবে ব্যস্ত থাকবে। কুমার বলেন, “প্রায় ৫০ দিন এমন হবে, যখন চারটি বা তার বেশি গ্রহ এক সঙ্গে অবস্থান করবে (Stelliums)। গত ১০০ বছরে এত বেশি সংখ্যক গ্রহের এমন সমাহার ঘটেনি। এতগুলি গ্রহ যখন একসঙ্গে জড়ো হয়, তখন ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে বিশ্বজুড়ে দ্রুত পরিবর্তন আসে।”

বলা হচ্ছে, ইউরেনাস গ্রহের বৃষ রাশিতে প্রবেশ অর্থ ও স্থিতিশীলতাকে নাড়িয়ে দেবে, অন্যদিকে শনি ও নেপচুনের মীন রাশিতে বিরল মিলন কাঠামো ও আধ্যাত্মিকতার মিশ্রণ ঘটাবে। শনি-শাসিত রাশিতে প্লুটোর গতিবিধি সত্য, ন্যায্যতা এবং উচ্চতর উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে মানবতাকে সমস্ত ব্যবস্থা পুনর্গঠনে বাধ্য করবে।

সৌর সর্বোচ্চতা: শীর্ষে সূর্য

বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৬ সাল শক্তিশালী সোলার ম্যাক্সিমা বা সৌর সর্বোচ্চতার মাঝামাঝি পড়বে। এই সময়কালে সূর্য শক্তিশালী চৌম্বক শক্তি এবং সৌর শিখা (solar flares) নির্গত করে। কুমার ব্যাখ্যা করেন, “সূর্যের বর্তমান চক্র ইতিহাসে দীর্ঘতমগুলির মধ্যে একটি। ২০২০ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে এর শক্তি সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাবে এবং ২০২৬-২৭ সাল এর একেবারে কেন্দ্রে অবস্থান করছে। এটি একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জ এবং সাফল্যের দরজা খুলে দেবে।”

২০২৬-এ যা যা ঘটতে পারে

  • বিশ্বজুড়ে কাঠামোগত পরিবর্তন: সরকার এবং নেতারা পরিবর্তনের মুখোমুখি হতে পারেন। কুমার বলেন, “মানুষ আর অনৈতিক নেতৃত্ব মেনে নেবে না। ২০২৬ সালের শেষের দিকে স্বচ্ছতা এবং নৈতিক দায়িত্বের দিকে পদক্ষেপ আশা করা যায়।”
  • প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, ভিন্ন প্রাণীর সঙ্গে যোগাযোগ: সৌর কার্যকলাপ বৃদ্ধির ফলে কৃত্রিম উপগ্রহ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটতে পারে, তবে এটি নতুন উদ্ভাবনের জন্ম দেবে। তিনি যোগ করেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি এবং এমনকি অন্য জীবন রূপের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি দেখা যাবে।”
  • প্রকৃতির সতর্কবার্তা: ভূমিকম্প এবং আগুনের মতো প্রাকৃতিক ঘটনা বৃদ্ধি পেতে পারে। কুমার মন্তব্য করেন, “গ্রহটি ভারসাম্য চাইছে। এটি জলবায়ু সংক্রান্ত দায়িত্বকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার জন্য মানুষের কাছে আহ্বান।”
  • আধ্যাত্মিকতার দিকে প্রত্যাবর্তন: অনেক মানুষ বস্তুগত আকর্ষণ ছেড়ে যোগ, ধ্যান এবং এনার্জি হিলিং-এর দিকে ঝুঁকবেন। কুমার বলেন, “প্রাচীন জ্ঞান ফিরে আসবে। মানুষ শান্তির সন্ধান করবে, ক্ষমতার নয়।”
  • মানুষ ও প্রযুক্তির সমন্বয়: ২০২৬ সালে মানুষ ও যন্ত্রের এক হওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে। কুমারের ভবিষ্যদ্বাণী, “মানুষের জীবনকাল বাড়ানোর নতুন উপায় এবং শরীরে প্রযুক্তির সংযোগের বিষয়ে জানতে পারবেন।”
  • ভ্রমণে সতর্কতা: বুধ, মঙ্গল এবং রাহুর এক সঙ্গে অবস্থানের কারণে ২০২৬ সালে অস্থির, দ্রুত পরিবর্তনশীল শক্তি দেখা যাবে। তিনি সতর্ক করেন, “ভ্রমণে উদ্ভাবন বাড়লেও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়বে। সচেতন থাকুন এবং কাজ করার আগে ভাবুন।”
  • রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন: কুমার পাঠকের কাছে আশা রাখতে বলেন যে ২০২৬ সালে আরও প্রতিবাদ, সংস্কার এবং সম্মিলিত আন্দোলন দেখা যাবে। কুমার বলেন, “এই পরিবর্তনগুলি বিশৃঙ্খল মনে হতে পারে, কিন্তু এগুলি প্রয়োজনীয়। এর মাধ্যমেই সমাজ পুরাতন কর্মফল ত্যাগ করে আরও শক্তিশালীভাবে পুনর্গঠিত হয়।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *