দিল্লি অ্যাসিড হামলা: টয়লেট ক্লিনারের চাঞ্চল্যকর মোড়, ‘আক্রান্তের’ বাবাই এখন পুলিশের জালে! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
দিল্লিতে এক কলেজছাত্রীর উপর অ্যাসিড হামলার ঘটনায় নতুন ও চাঞ্চল্যকর মোড়! যে যুবককে স্টকার ও মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, তার স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ‘আক্রান্ত’ তরুণীর বাবা গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশি জেরায় ফাঁস হলো এক অবিশ্বাস্য ষড়যন্ত্রের কথা। জানা যাচ্ছে, টয়লেট ক্লিনার ব্যবহার করে পুরো অ্যাসিড হামলার গল্পটিই সাজানো হয়েছিল।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্মী বাই কলেজের কাছে ২০ বছর বয়সী যে তরুণী হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল, সোমবার সন্ধ্যায় তার বাবাকে আটক করে দিল্লি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তরুণীর বাবা স্বীকার করেন যে তিনি টয়লেট ক্লিনার ব্যবহার করে এই হামলার ঘটনা সাজিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, যে ব্যক্তিকে তাঁর মেয়ে ‘অ্যাসিড হামলাকারী’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছিলেন, তার স্ত্রীকেও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি সামনে আসে যখন অ্যাসিড হামলার মূল অভিযুক্তের স্ত্রী, ওই তরুণীর বাবার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনে এফআইআর দায়ের করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই সঙ্গম বিহার এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ধর্ষণের মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকেই ওই ব্যক্তি সঙ্গম বিহারে লুকিয়ে ছিলেন। জেরার মুখে তিনি তদন্তকারীদের জানান, তিনি এবং তাঁর মেয়ে মিলে এই পুরো অ্যাসিড হামলার গল্পটি ফেঁদেছিলেন। এর উদ্দেশ্য ছিল— আইনি ও ব্যক্তিগত বিবাদের জেরে তাঁর মেয়ের অভিযুক্ত সেই ব্যক্তি এবং তার দুই আত্মীয়কে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো।
তদন্তকারী এক বরিষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “তিনি স্বীকার করেছেন যে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে পুরো ঘটনাটি সাজানো হয়েছিল।”
এর আগে পুলিশ জানিয়েছিল, অ্যাসিড হামলার অভিযোগ সন্দেহজনক মনে হচ্ছে, কারণ ঘটনার সময় মূল অভিযুক্তের অবস্থান ওই জায়গার কাছে ছিল না। তদন্তকারীরা হামলার বিষয়ে কোনো দৃঢ় প্রমাণও খুঁজে পাননি।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় বর্ষের স্নাতক ছাত্রী ওই তরুণীর দাবি ছিল, উত্তর-পশ্চিম দিল্লির অশোক বিহারে লক্ষ্মী বাই কলেজের বাইরে তাঁর উপর অ্যাসিড হামলা হয়। তাঁর পরিবার জানিয়েছিল, ব্যাগের আড়ালে মুখ ঢাকলেও তরুণীর হাত ও পেটে আঘাত লাগে। তরুণীর বয়ান অনুযায়ী, “সবকিছু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ঘটে গেল। ওরা এসে আমার উপর অ্যাসিড ছুঁড়ে মারে। আমি আমার ব্যাগ আর ফোন দিয়ে মুখ রক্ষা করতে সক্ষম হই। তবে আমার ফোনটা সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এমনকি আমি কাউকে ফোনও করতে পারিনি। আমি যন্ত্রণায় কাঁদছিলাম আর সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলাম। ওরা পালিয়ে যায়। একজন বয়স্ক লোক আমাকে দেখে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং আমার বাবা-মাকেও খবর দেন।”