ভারতকে শায়েস্তা করতে গিয়ে নিজেই ফাঁদে? ট্রাম্পের ট্যারিফের জবাব দিল দিল্লি, কী ঘটল আচমকা – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখনই আলোচনায় এসেছেন, ভারতের উপর ট্যারিফ বা শুল্ক আরোপের বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে। একদিকে ভারত-আমেরিকা ‘বিশেষ বন্ধুত্বের’ কথা শোনা গেলেও, অন্যদিকে বড় আকারের শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর বারবার অভিযোগ ছিল, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনছে বলেই এই অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হচ্ছে। অথচ, বিশ্বজুড়ে রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি তেল কেনে চীন, যাদের উপর ট্যারিফ আরোপের কারণ হিসেবে ট্রাম্প দেখিয়েছিলেন অন্য অজুহাত—গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রপ্তানি বন্ধ করা।
আমেরিকার মূল উদ্বেগের কেন্দ্রে ছিল ভারতের রুশ তেল ক্রয়। এমনকি ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার জন্যও এর আগে ভারতকে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু, এবার প্রকাশিত হলো চমকে দেওয়ার মতো এক পরিসংখ্যান। এই তথ্যই স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, ভারত এবার আমেরিকাকে ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনি’ নীতিতে এক বড় উত্তর দিয়েছে।
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের পর এই প্রথম ভারত আমেরিকা থেকে বিপুল পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। এটি একপ্রকার আমেরিকার ট্যারিফ চাপের জবাব বলেই মনে করা হচ্ছে। আগে আমেরিকা ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল যে, ভারত রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কিনে পরিশোধন করে বিশ্বজুড়ে বিক্রি করে মুনাফা লুটছে। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভারত এখন আমেরিকা থেকে তেল আমদানি বাড়ানোয় পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নিয়েছে।
শক্তি সংস্থা কেপলারের (Kepler) পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি মাসের ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভারত প্রতিদিন ৫.৪০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমেরিকা থেকে আমদানি করেছে। যা ২০২২ সালের পর এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। মাস শেষ হতে হতে এই আমদানির পরিমাণ প্রতিদিন ৫.৭৫ লক্ষ ব্যারেল পর্যন্ত পৌঁছতে পারে বলে অনুমান। যদিও রাশিয়া এখনও ভারতের তেলের প্রধান উৎস, তবে সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপটি ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য-উত্তেজনার মধ্যেই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মনে করা হচ্ছে, দু’দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার আবহে ভারতকে আরও বেশি করে আমেরিকার অপরিশোধিত তেল কিনতে দেখা যাচ্ছে।