ভোটের তালিকা থেকে আপনার নাম বাদ পড়েনি তো? SIR 2.0-এ নাম তোলার শেষ সুযোগ! না জানালে বিপদে পড়বেন? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

নির্বাচন কমিশন দেশের ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ‘সিস্টেমেটিক ইন্টেন্সিভ রিভিশন ২.০’ (SIR 2.0) প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই নিবিড় সংশোধন তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হলে ভোটারদের নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে হবে এবং প্রয়োজনে নথিও জমা দিতে হবে।

বর্তমানে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, ছত্তিশগড়, গোয়া, গুজরাট, কেরালা, লাক্ষাদ্বীপ, মধ্যপ্রদেশ, পুদুচেরি, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ-এ এই প্রক্রিয়া চালুর ঘোষণা করেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ভোটার তালিকা ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে নাম সংযোজন বা তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী ৪ নভেম্বর থেকে।

কেন এই প্রক্রিয়া চালু হলো?

নির্বাচন কমিশন দেশের ভোটার তালিকা সম্পূর্ণরূপে ত্রুটিমুক্ত ও নির্ভুল করতে চাইছে। পুরনো তালিকায় অনেক ভুল, নকল এবং ভুয়ো নাম ঢুকে পড়েছে, যা বাদ দেওয়া জরুরি। এই কারণেই প্রায় ২০ বছর পুরনো নিবিড় সংশোধনের (২০০৪-২০০৫ সালের তালিকা) ভিত্তিকে ধরে একটি নতুন তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ভোটারদের নিজেদের অথবা পরিবারের কোনও সদস্যের নাম ওই পুরনো তালিকায় খুঁজে দেখতে হবে। যাঁরা তা করতে পারবেন না, তাঁদের নথি জমা দিয়ে প্রমাণ করতে হবে যে তাঁরা ভোট দেওয়ার যোগ্য। নির্বাচনকে আরও স্বচ্ছ ও শক্তিশালী করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

স্টেপ বাই স্টেপ জেনে নিন কী করতে হবে?

১. নতুন ফর্ম পূরণ: ৪ নভেম্বর থেকে প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রথমে আপনাকে ‘ফর্ম ১’ পূরণ করতে হবে। বুথ লেভেল অফিসার (BLO) বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই ফর্ম বিতরণ করবেন। যদি কোনও কারণে BLO-এর থেকে ফর্ম না পান, তবে ভোটার হেল্পলাইন অ্যাপ, voters.eci.gov.in ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড বা নিকটস্থ নির্বাচন অফিস থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। ফর্মে আপনার সম্পূর্ণ নাম, বর্তমান ঠিকানা, জন্মতারিখ, বয়স ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য নির্ভুলভাবে পূরণ করুন। ভুল তথ্য দিলে নাম বাতিল হতে পারে।

২. পুরনো তালিকায় নাম খুঁজুন: যদি আপনার নাম ২০০৪-২০০৫ সালের নিবিড় সংশোধন তালিকায় থাকে, তবে কোনও নথি দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। যদি না থাকে, তবে আপনার বাবা-মা, দাদু-ঠাকুমা, বা অন্য কোনও আত্মীয়ের নাম সেই তালিকায় খুঁজে দেখতে হবে এবং ফর্মে তাঁদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক উল্লেখ করতে হবে।

৩. নাম না থাকলে নথি জমা দিন: পুরনো তালিকায় যদি নিজের বা পরিবারের কারও নাম না থাকে, তাহলেও ভয় পাওয়ার কারণ নেই। এই ক্ষেত্রে আপনাকে আধার কার্ড, জন্ম প্রমাণপত্র, রেশন কার্ড, পাসপোর্ট, দশম বা দ্বাদশ শ্রেণির মার্কশিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা বিবাহিত মহিলাদের জন্য ম্যারেজ সার্টিফিকেট-এর মতো নথি জমা দিতে হবে। এই নথিগুলির ভিত্তিতেই আপনার নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।

৪. ফর্ম জমা দিন: ফর্ম পূরণ করার পর আপনার সামনে তিনটি বিকল্প রয়েছে। আপনি বুথ লেভেল অফিসার-এর কাছে ফর্ম দিতে পারেন, voters.eci.gov.in ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আপলোড করতে পারেন, অথবা নিকটস্থ নির্বাচন অফিসে সরাসরি জমা করতে পারেন।

ডিসেম্বরের মধ্যে ফর্ম জমা দিন

SIR-2 প্রক্রিয়াটি মোট তিন মাসে সম্পন্ন হবে। এটি শুরু হবে ৪ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে। ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে। এরপর নির্বাচন কমিশন সমস্ত আবেদন খতিয়ে দেখে জানুয়ারি ২০২৬ সালে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে।

শহরের বাইরে থাকলে কী করবেন?

যদি আপনি চাকরি বা পড়াশোনার জন্য বাড়ির বাইরে থাকেন, তবে অনলাইন প্রক্রিয়াটি আপনার জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক। অথবা পরিবারের কোনও সদস্যকে দিয়ে এই কাজটি করিয়ে নিতে পারেন। এই প্রক্রিয়ার সময় কোনও সমস্যা হলে ভোটার হেল্পলাইন নম্বর ১৯৫০-এ কল করুন বা Voter Helpline অ্যাপ ডাউনলোড করে সহায়তা নিন। এই পরিষেবাটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এবং বাংলা-সহ বিভিন্ন ভাষায় পাওয়া যায়। যদি কারও নাম ভুল করে বাদ পড়ে গিয়ে থাকে, তবে তিনি ‘ফর্ম ৮’ পূরণ করে পুনরায় নিজের নাম যোগ করাতে পারেন। এই ক্ষেত্রেও ভোটারকে প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *