বাদাম-ডিম ফেল! এই ‘সস্তা ড্রাইফ্রুট’-এ লুকিয়ে আছে বেশি প্রোটিন, মাথা থেকে হার্ট থাকবে মজবুত? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সাধারণত কাজু-পেস্তা বা দামি সুকা মেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু উচ্চ মূল্যের কারণে অনেকের পক্ষেই নিয়মিত এই ড্রাইফ্রুটস কেনা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে জানলে অবাক হবেন, এমন একটি সহজলভ্য ও সস্তা সুকা মেওয়া আছে, যা প্রোটিনের পরিমাণে দামি কাজু এবং এমনকি ডিমকেও হার মানাতে পারে। এটি কেবল সাশ্রয়ী নয়, বরং মস্তিষ্ক থেকে হৃৎপিণ্ড পর্যন্ত শরীরের একাধিক অঙ্গকে সুস্থ রাখতে দারুণ কার্যকর।
আসলে, এই ‘সস্তা ড্রাইফ্রুটস’ হলো চীনাবাদাম বা শেনদানা। শীতকালে চিনাবাদাম ও গুড়ের লাড্ডুর কথা বিশেষভাবে বলা হয়, যা শরীরে শক্তি যোগানোর পাশাপাশি স্বাদেও দারুণ। চিনাবাদামকে ‘সস্তার ড্রাইফ্রুটস’ বলা হয় কারণ এতে দামি কাজু-বাদামের মতো প্রায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান মজুত থাকে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অল্প পরিমাণ চিনাবাদাম রাখলে কী কী উপকার পাওয়া যায়, তা জেনে নেওয়া যাক।
চিনাবাদাম হলো একটি সস্তা, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সুপারফুড, যা আপনার শক্তি বাড়ায় এবং আপনার হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক, ত্বক ও চুলকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে চিনাবাদাম খেলে আপনি দীর্ঘকাল ফিট ও সক্রিয় থাকতে পারবেন। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে কোনো কিছুই খাওয়া উচিত নয়।
প্রোটিনের পাওয়ারহাউস
চিনাবাদামে প্রোটিনের পরিমাণ অবিশ্বাস্যভাবে বেশি থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম চিনাবাদামে প্রায় ২৫-২৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা ১০০ গ্রাম ডিমে থাকা প্রায় ১৩ গ্রাম প্রোটিন এবং ১০০ গ্রাম কাজুতে থাকা ১৮ গ্রাম প্রোটিনের চেয়ে অনেক বেশি। এই কারণেই নিরামিষাশীদের জন্য চিনাবাদামকে প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস হিসেবে গণ্য করা হয়।
হৃদয় রাখে সুস্থ
চিনাবাদামে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও, চিনাবাদামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রেসভেরাট্রল (Resveratrol) হৃৎপিণ্ডকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
অনেকের ধারণা, চিনাবাদাম খেলে ওজন বাড়ে। কিন্তু বাস্তবে এর উল্টোটা ঘটে। চিনাবাদামের ফাইবার ও প্রোটিন দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে। ফলে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরের বিপাক ক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে।
মস্তিষ্ক ও স্মৃতিশক্তির জন্য উপকারী
চিনাবাদামে উপস্থিত নিয়াসিন এবং ভিটামিন বি৩ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। এটি স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে এবং অ্যালজাইমার্সের মতো রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। শিশুদের জন্যও এটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিকারী স্ন্যাকস, তাই খাদ্যতালিকায় চিনাবাদাম বা পিনাট বাটার যোগ করা উচিত।
ত্বক ও চুলের জন্য সেরা
চিনাবাদামের ভিটামিন ই এবং জিঙ্ক ত্বককে উজ্জ্বলতা দেয় এবং চুলকে মজবুত করে। এটি বার্ধক্যের প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয় এবং ত্বককে ভেতর থেকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। চিনাবাদামের তেল ত্বক ও চুলের জন্য চমৎকার ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
চিনাবাদামের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) খুবই কম, যার ফলে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে দেয় না। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস বিকল্প হতে পারে, এমনকি খাবারের সঙ্গেও অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। তবে, ডায়াবেটিস রোগীরা অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে চিনাবাদাম খাবেন।