রেড ওয়াইন কি সত্যি ‘হার্টের টনিক’? বিশেষজ্ঞের জবাব জানলে চমকে যাবেন! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

রেড ওয়াইন নিয়ে প্রচলিত একটি ধারণা হলো, এটি নাকি স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী, বিশেষত হৃৎপিণ্ডের জন্য। অনেক ওয়াইনপ্রেমী প্রায়শই এই দাবি করেন যে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে রেড ওয়াইন পান করা উচিত। কিন্তু এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

ওয়াইন বিশেষজ্ঞ সোনল হল্যান্ড এই প্রচলিত ধারণার ওপর আলোকপাত করেছেন। তিনি জানান, এমনটা দাবি করা হয় যে রেড ওয়াইনে ‘রেসভেরাট্রল’ (Resveratrol) নামক একটি উপাদান থাকে, যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। তবে তাঁর মতে, রেসভেরাট্রল পাওয়ার জন্য রেড ওয়াইনই একমাত্র বা সর্বোত্তম পথ নয়।

সোনল হল্যান্ড স্পষ্ট করে বলেন, রেসভেরাট্রল হৃদয়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হলেও, কেবল এটি পাওয়ার জন্য রেড ওয়াইন পান করা মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। রেসভেরাট্রল উপাদানটি খাদ্যতালিকায় বেরি, আঙুর এবং চীনাবাদাম (শेंगদানা) অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমেও যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া সম্ভব। বিশেষজ্ঞের কথায়, কোনো অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ই কখনোই স্বাস্থ্যকর টনিক বা পানীয় হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে না। তাই, যদি পান করতে হয়, তবে তা অত্যন্ত সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করাই শ্রেয়, এটিকে যেন কোনো অবস্থাতেই দৈনন্দিন জীবনের স্থায়ী বিকল্প বা স্বাস্থ্য-উপযোগী পানীয় হিসেবে গণ্য করা না হয়।

ওয়াইন নিয়ে আরও কিছু ভুল ধারণা সমাজে প্রচলিত আছে। যেমন, অনেকে মনে করেন শ্যাম্পেন শুধুমাত্র জমকালো পার্টি বা অনুষ্ঠানের জন্যই তৈরি। কিন্তু স্পার্কলিং ওয়াইন (শ্যাম্পেনের মতো বুদবুদযুক্ত ওয়াইন) এর ব্যবহার কেবল পার্টিতে সীমাবদ্ধ নয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, অ্যালকোহলযুক্ত যেকোনো পানীয়ের ক্ষেত্রেই পরিমিতি বোধ রাখা সবচেয়ে জরুরি।

আরেকটি প্রচলিত ভুল ধারণা হলো, ‘মিষ্টি ওয়াইন’ (Sweet Wine) মানেই তা সস্তা এবং যারা সবেমাত্র ওয়াইন পান শুরু করেছেন, তাদের জন্য। অনেকের মতে, অভিজ্ঞ পানকারীদের জন্য এটি নয়। ওয়াইন বিশেষজ্ঞ সোনল হল্যান্ড এই ধারণাটিকেও সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করেছেন। তিনি জানান, পৃথিবীতে এমন বহু মিষ্টি ওয়াইন আছে, যা তাদের উচ্চ গুণমান এবং আকাশছোঁয়া দামের জন্য পরিচিত। ফ্রান্স এবং হাঙ্গেরির মতো দেশে তৈরি কিছু মিষ্টি ওয়াইন তাদের মানের কারণে অত্যন্ত মূল্যবান। তাই, মিষ্টি ওয়াইন সস্তা এবং শুধু নতুন পানকারীদের জন্য—এমন ভুল ধারণা পোষণ করা উচিত নয়।

এক্ষেত্রে ওয়াইন বিশেষজ্ঞের মূল বার্তাটি খুব পরিষ্কার: অ্যালকোহলকে স্বাস্থ্যকর পানীয় ভাবার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং পান করার অভ্যাস থাকলে তা অবশ্যই পরিমিত হতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *