ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’-র প্রভাব বাংলায়! প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস, কবে থামবে এই তাণ্ডব? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
আন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়ার পর প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ দুর্বল হয়ে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বুধবার ভোরের দিকে মাছিলিপত্তনম এবং কলিঙ্গপত্তনমের মধ্যবর্তী ইয়ানান উপকূলে ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এর জেরে উপকূলীয় অঞ্চলে গাছপালা উপড়ে এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার খবর মিলেছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। যদিও দুর্বল হলেও ‘মোন্থা’-র পরবর্তী প্রভাব তেলঙ্গনা, তামিলনাড়ু, ঝাড়খণ্ড-সহ পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশে অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই রাজ্যগুলিতে আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে।
বাংলায় কতদিন চলবে এই বৃষ্টি?
পশ্চিমবঙ্গে সরাসরি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত না হানলেও ‘মোন্থা’-র প্রভাবে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় বুধবার সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বুধবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং দমকা ঝোড়ো হাওয়ার জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের মতো কয়েকটি জেলায় ভারী (৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার) বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা, যেমন উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলাতে ২৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি চলতে পারে। সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বইবে।
বুধবার হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম, এই ছয়টি জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার থেকে বর্ধমান, পুরুলিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলায় বৃষ্টি শুরু হবে, যা চলবে টানা শনিবার পর্যন্ত। শুক্রবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি রয়েছে। তবে, শনিবার থেকে বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করবে এবং রবিবার আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা
‘মোন্থা’-র প্রভাবে উত্তরবঙ্গেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। ২৯ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বইবে।
আগামী ৩০ অক্টোবর মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি জেলাতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর পাশাপাশি, ৩১ অক্টোবর উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলাতে অতি ভারী বৃষ্টি অর্থাৎ ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। ওইদিন মালদা এবং উত্তর দিনাজপুরেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলে সমুদ্রে নামার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।