তিন সন্তানের মায়ের সঙ্গে জোর করে বিয়ে! ‘আমি শুধু ফুর্তি করছিলাম’, বিয়ের পিঁড়িতেই কেন এমন চিৎকার যুবকের? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

বিয়ের পবিত্র বন্ধন সাত জন্মের হলেও, বর্তমান সমাজে কখন কে কাকে প্রতারণা করবে, তা বলা মুশকিল। বিহারের ভাগলপুরে সম্প্রতি এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে অন্য পুরুষের টানে নিজের স্বামীকে ত্যাগ করা এক মহিলাকে শেষমেশ সেই প্রেমিকের সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধতে হলো, যদিও সেই যুবক এতে একেবারেই রাজি ছিল না।

জানা গিয়েছে, তিন সন্তানের জননী ওই মহিলা যখন স্বামীকে ছেড়ে এই যুবকের কাছে এলেন, তখন সেই প্রেমিক যুবক বিবাহ করতে অস্বীকার করে। যুবকের সাফ কথা ছিল, সে শুধু ‘ফুর্তি’ করার জন্যই মহিলাটির সঙ্গে ছিল, বিয়ে করার কোনো ইচ্ছা তার নেই। কিন্তু পরিস্থিতি এমন মোড় নিল যে, গ্রামবাসীরা ও সমাজের মানুষের চাপে শেষমেশ অনিচ্ছা সত্ত্বেও মন্দিরেই তাদের বিয়ে দিতে বাধ্য করা হলো।

বিয়ের মণ্ডপে উচ্চস্বরে প্রতিবাদ

বিয়ের সময় যুবকটি ক্রমাগত চিৎকার করতে থাকে। সে বলতে থাকে, “প্লিজ! তিন সন্তানের মায়ের সঙ্গে আমার বিয়ে দেবেন না। আমি তো শুধু এর সঙ্গে ফুর্তি করছিলাম, খাওয়া-দাওয়া আর থাকার জন্যই সঙ্গে ছিলাম। আমি ওকে বিয়ে করতে চাই না, ও আমার থেকে পাঁচ বছরের বড়!” কিন্তু তার এই প্রতিবাদ কেউ শোনেনি। বাধ্য হয়েই তাকে ওই মহিলার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়।

কেমন করে ঘটল এই ঘটনা?

ঘটনাটি ভাগলপুরের কো ম্পা নি বাগ এলাকার। জানা যায়, কো ম্পা নি বাগের বাসিন্দা কুন্দন দাস এবং দিল্লিতে কর্মরত নিশা—এই দু’জনের মধ্যে প্রায় পাঁচ বছর ধরে পরিচয় ছিল। তাদের সম্পর্কের কথা জানতে পেরে নিশার স্বামী তাকে ছেড়ে দেন। এরপর নিশা তার তিন সন্তানকে (যার মধ্যে বড়টির বয়স প্রায় ১৭ বছর) নিয়ে কুন্দনের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন।

একসঙ্গে থাকার সময় নিশা ক্রমাগত কুন্দনের উপর বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। এতে বিরক্ত হয়ে কুন্দন দিল্লি ছেড়ে নিজের বাড়ি ভাগলপুরে ফিরে আসেন। কিছুদিন পর নিশা নিজেও ভাগলপুরে এসে কুন্দনের বাড়িতে গিয়ে আবারও বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। কুন্দন প্রতিবারই তা প্রত্যাখ্যান করে পালিয়ে যেতেন।

হাই ভোল্টেজ নাটক ও জোরপূর্বক বিয়ে

দীর্ঘদিন ধরে এই টানাপোড়েন চলার পর বুধবার রাতে পরিস্থিতি চরমে ওঠে। নিশা কুন্দনের বাড়িতে এসে ফের বিয়ের কথা বললে কুন্দন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তাদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ধরে উচ্চ ভোল্টেজের নাটক চলতে থাকে। এরপর সমাজের লোকজন তাদের দু’জনকে ধরে ফেলে এবং স্থানীয় একটি মন্দিরে নিয়ে আসে। পুলিশকে খবর দিয়ে সেখানেই তাদের বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।

যদিও কুন্দন শেষ মুহূর্তেও এই বিয়েতে তার অনিচ্ছার কথা জানায়। সে বারবার বলতে থাকে যে সে নিশার থেকে অনেক ছোট এবং তাদের মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। কুন্দনের কথায়, “আমি তো শুধু খাওয়া-দাওয়া আর সঙ্গে থাকার জন্যই ওর সাথে ছিলাম। তিন সন্তানের মাকে আমি কেনই বা ভালোবাসব!” কিন্তু সমাজের মানুষের সিদ্ধান্তে শেষমেশ তাকে সেই মহিলাকেই স্ত্রী রূপে মেনে নিতে হলো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *