রিও ডি জেনেইরোতে পুলিশি অভিযানে হঠাৎ ৬৪ জনের মৃত্যু! আসলে কী ঘটেছিল, জানাল জাতিসংঘ – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে মঙ্গলবার (স্থানীয় সময় অনুযায়ী) সংঘটিত অপরাধ দমনে চালানো এক বিশাল পুলিশি অভিযানে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চারজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে এই নিরাপত্তা অভিযানটিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে অন্যতম বৃহৎ অভিযান বলে দাবি করা হয়েছে।
তবে এই ঘটনাকে ‘ভয়ঙ্কর’ আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় ‘এক্স’ (পূর্বতন টুইটার) প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করে জানিয়েছে, রিও ডি জেনেইরোর ফেভেলা এলাকায় চলমান পুলিশি কার্যক্রমে তারা ‘আতঙ্কিত’। জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষ নিহত চার পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত ও কার্যকর তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলার জন্য ব্রাজিল সরকারের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
অভিযানে অংশ নেয় ২৫০০ নিরাপত্তা কর্মী, গ্রেপ্তার ৮১
রিও ডি জেনেইরোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ‘কোমান্ডো ভেরমেলো’ (রেড কমান্ড) নামক অপরাধী গোষ্ঠীর আঞ্চলিক বিস্তারকে প্রতিহত করা। রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এই অভিযানের পরিকল্পনা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছিল এবং এতে ২,৫০০-এরও বেশি সামরিক ও বেসামরিক পুলিশ অংশ নেয়।
নিরাপত্তা বাহিনী এই অপরাধী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রিত একাধিক এলাকায় প্রবেশ করে। এই অভিযানের মাধ্যমে অন্তত ৮১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, অভিযান যেহেতু এখনও চলছে, তাই হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
পুলিশের ওপর ড্রোন হামলা
সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষ অভিযান চলাকালীন অন্তত ৪২টি রাইফেল বাজেয়াপ্ত করার খবর দিয়েছে। রাজ্য সরকার আরও জানিয়েছে, অপরাধী চক্রের সদস্যরা পাল্টা আঘাত হানতে পুলিশের ওপর ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। অপরাধীরা পেনহা কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের আক্রমণ করতে ড্রোন ব্যবহার করে।
রিও ডি জেনেইরোর গভর্নর ক্লাউদিও কাস্ত্রো এই অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেন, এটি এখন আর সাধারণ অপরাধ নয়। একসময় বামপন্থী বন্দিদের একটি দল হিসেবে গঠিত এই সংগঠনটি বর্তমানে একটি আন্তর্জাতিক গ্যাংয়ে পরিণত হয়েছে, যা মাদক পাচার, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে।