ভারতের সেই ‘ভয়ংকর’ দ্বীপ! কাছে গেলেই স্বাগত জানাবে তীর-ধনুক, সরকারেরও কেন সেখানে যেতে ‘ভয়’ লাগে? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
গোটা ভারতে এমন একটি রহস্যময় এলাকা আছে, যেখানে যেতে স্বয়ং সরকারও ‘ভয়’ পায় বা কুণ্ঠাবোধ করে। এই ‘ভয়’-এর কারণ হল, দ্বীপটি এমন একটি আদিম জনজাতির জন্য সংরক্ষিত, যাদের বাইরের বিশ্বের সঙ্গে আজও কোনও যোগাযোগ নেই।
আসুন, জেনে নেওয়া যাক ভারতের সেই রহস্যময় দ্বীপ ও তার বাসিন্দাদের কথা, যেখানে পর্যটক তো দূর, সরকারিভাবেও প্রবেশ নিষিদ্ধ।
৫ কিলোমিটারের মধ্যে গেলেই মৃত্যুফাঁদ!
এই রহস্যময় দ্বীপটি আর কোথাও নয়, আমাদের দেশ ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান দ্বীপপুঞ্জেরই অংশ। এই দ্বীপটির নাম উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ। এখানেই বাস করে বিশ্বের অন্যতম রহস্যময় ও প্রাচীন জনজাতি— সেন্টিনেলি জনজাতি। বহির্বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন এই জনজাতির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার।
৫০ হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস
সেন্টিনেলি জনজাতি প্রায় ৫০ হাজার বছর ধরে এই দ্বীপটিতে বসবাস করছে বলে অনুমান করা হয়। এই দীর্ঘ সময়ে তারা বাইরের জগতের কারোর সঙ্গেই কোনো যোগাযোগ স্থাপন করেনি বা করতে দেয়নি। তাই তাদের জীবনযাত্রা, ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে এখনও খুব কমই জানা যায়। তাদের এই বিচ্ছিন্নতা বজায় রাখতে সরকার কঠোর আইনি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
তীর-ধনুক দিয়ে ‘স্বাগত’
বিভিন্ন সময়ে বাইরের বিশ্বের মানুষ এই সেন্টিনেলি জনজাতির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সেন্টিনেলিরা কখনোই সেই উদ্যোগ সফল হতে দেয়নি। বরং তীর-ধনুক নিয়ে আক্রমণাত্মকভাবে তারা বহিরাগতদের ‘স্বাগত’ জানিয়েছে। ইতিহাস বলছে, যারা এই দ্বীপে যাওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছেন, তাদের অনেকেই সেন্টিনেলিদের হাতে নিহত হয়েছেন বা বেদনাদায়ক মৃত্যুর শিকার হয়েছেন।
শিকারই তাদের জীবনধারণের মূল ভিত্তি
সেন্টিনেলি জনজাতির জীবনধারণের মূল ভিত্তি হলো শিকার। তারা মূলত শিকার ও মৎস্য শিকারের মাধ্যমে জীবন নির্বাহ করে। দূর থেকে কয়েকবার তাদের মাছ ধরতে দেখা গেছে বলে জানা যায়।
সরকারিভাবে কঠোর নিষেধাজ্ঞা
এই জনজাতির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং তাদের জীবনযাত্রায় কোনো হস্তক্ষেপ এড়াতে ভারত সরকার ১৯৫৬ সাল থেকে উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপের ৫ কিলোমিটারের (প্রায় ৩ মাইল) মধ্যে সমস্ত প্রকার প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।