নিঃশব্দ ঘাতক বিষাক্ত বাতাস! দূষণের জেরে কম বয়সেই দুর্বল হচ্ছে আপনার সন্তানধারণের ক্ষমতা? গবেষণা যা বলছে – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে যে বায়ু দূষণ শুধুমাত্র ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করছে না, এটি মারাত্মকভাবে নারী ও পুরুষের সন্তানধারণের ক্ষমতা বা ফার্টিলিটি কমিয়ে দিচ্ছে। গোটা বিশ্বেই বায়ু দূষণ এখন এক ভয়াবহ সমস্যা, যার কারণে বাতাসে মিশে থাকা বিষাক্ত কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দূষিত বাতাস হৃদরোগীদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। তবে এখন নতুন এক আমেরিকান গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, বায়ু দূষণের প্রভাবে কম বয়সেই দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি।
‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রকাশিত এই গবেষণা বলছে যে বাতাসে উপস্থিত বিষাক্ত কণা শুধুমাত্র ফুসফুসের উপর প্রভাব ফেলে না, বরং ডিম্বাণু, শুক্রাণু এবং ভ্রূণের বিকাশেও গুরুতর বাধা সৃষ্টি করে। আগে মনে করা হতো দূষণের প্রভাব মহিলাদের ফার্টিলিটির উপর বেশি, কিন্তু এই নতুন রিপোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে যে পুরুষদের উপর এর প্রভাবও সমানভাবে মারাত্মক। বাতাসে থাকা অর্গানিক কার্বন এবং পার্টিকুলেট ম্যাটার (PM) ডিম্বাণু ও শুক্রাণু উভয়ের গুণমান নষ্ট করতে পারে, যার ফলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে যে মূলত ডিজেল চালিত যানবাহন, শিল্প কারখানা এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত পার্টিকুলেট ম্যাটার (PM) ফার্টিলিটির উপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এই সূক্ষ্ম কণাগুলি শরীরে প্রবেশ করে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর বিকাশ চক্রকে ব্যাহত করে, ফলে নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়। এমনকি এটি ভ্রূণের গুণমানও কমিয়ে দেয়। গবেষকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি তো বটেই, অল্প সময়ের জন্য দূষণের সংস্পর্শও ফার্টিলিটির জন্য বিপজ্জনক।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন যে, ভারতে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের স্ত্রীদের মধ্যে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কম দেখা গেছে, কারণ তাঁরা দীর্ঘ সময় উচ্চ দূষণযুক্ত এলাকায় কাটান। গবেষণার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, আইভিএফ (IVF) ক্লিনিকের ভিতরের বাতাসের গুণমানও ফার্টিলিটি ফলাফলে প্রভাব ফেলছে। দেখা গেছে, এয়ার ফিল্টার থাকা সত্ত্বেও ক্লিনিকের অভ্যন্তরে অর্গানিক কার্বন এবং ওজোনের মাত্রা বেশি থাকলে ডিম্বাণুর টিকে থাকার হার এবং নিষিক্তকরণের হার কমে যায়। তাই ফার্টিলিটি চিকিৎসা করানো দম্পতিদের শুধু বাইরের নয়, ভিতরের বাতাসের গুণমানের দিকেও নজর দেওয়া উচিত।