অবিশ্বাস্য তথ্য ফাঁস! আপনার বালিশের কভারটি টয়লেট সিটের চেয়েও ১৭ হাজার গুণ বেশি নোংরা? – এবেলা
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2024/04/ls-pilow-5-1.jpg?ssl=1)
এবেলা ডেস্কঃ
আসলে কী ঘটছে: আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন ঘরদোর পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। কিন্তু আপনি কি জানেন, আপনার ঘরের সবচেয়ে অবহেলিত জিনিসগুলোর মধ্যে একটি, যা প্রতিদিন আপনার মুখের সংস্পর্শে আসছে, তা একটি টয়লেট সিটের থেকেও বহুগুণ বেশি নোংরা? অবাক লাগলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বালিশের কভার যদি নিয়মিত না ধোয়া হয়, তবে সেখানে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ রীতিমতো ভীতিজনক!
এক সপ্তাহ না ধোলেই বিপদ: বালিশের কভার কতদিন পর ধোয়া উচিত, এই প্রশ্নের উত্তরে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আমেরিকার ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের (National Sleep Foundation) একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বালিশের কভার মাত্র এক সপ্তাহ না ধুলে তার ওপর টয়লেট সিটের চেয়েও বেশি ব্যাকটেরিয়া জমে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, মাত্র সাত দিনে বালিশের কভারের ওপর প্রায় ১৭ হাজার গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া জমার আশঙ্কা থাকে। আর এই কভার যদি চার সপ্তাহ ধরে না কাচা হয়, তাহলে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কোটি কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।
কোন ব্যাকটেরিয়া লুকিয়ে আছে?: ময়লা বালিশের কভারে গ্রাম-নেগেটিভ রড, গ্রাম-পজিটিভ রড, ব্যাসিলি ও গ্রাম-পজিটিভ কক্কির মতো বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে কিছু ব্যাকটেরিয়া ক্ষতিকর নাও হতে পারে, কিন্তু অনেকগুলিই গুরুতর চর্মরোগ ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার জন্ম দিতে পারে।
যেভাবে ক্ষতি করে আপনার ত্বক ও শ্বাসযন্ত্রের: বালিশের কভারে জমা হওয়া ধুলো, ঘাম, তেল এবং মৃত ত্বকের কোষ ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মিশে আপনার ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে। এর ফলে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে ব্রণ, একজিমা বা রোসেশিয়ার মতো সমস্যা বেড়ে যায়। স্যাঁতসেঁতে বালিশে ফাঙ্গাসও তৈরি হতে পারে, যা রিংওয়ার্মের মতো সংক্রমণের কারণ। এছাড়া, ধূলিকণা, ফাঙ্গাস ও পোষা প্রাণীর লোম জমে অ্যালার্জি ও হাঁজলর সমস্যা বাড়াতে পারে। হাঁচি, চোখ দিয়ে জল পড়া, শ্বাস নিতে অসুবিধা এবং নাক বন্ধের মতো উপসর্গ দেখা দিলে তা দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
সংক্রমণের আশঙ্কা: অপরিষ্কার বালিশের কভার থেকে স্ট্যাফাইলোকক্কাস এবং স্ট্রেপটোকক্কাসের মতো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ছড়াতে পারে। আপনার মুখে কোনো কাটা স্থান, ব্রণ বা ক্ষত থাকলে এই ব্যাকটেরিয়াগুলো দ্রুত সংক্রমণ ঘটাতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে কভার না বদলালে উকুন বা বিছানার ছারপোকার মতো সমস্যাও হতে পারে।
সমাধান কী: এই মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে বালিশের কভার এবং বিছানার চাদর প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার পরিষ্কার করা উচিত। গরম জলে ধোয়ার ফলে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি, বালিশ রোদে শুকাতে দিলে পরজীবী বা প্যারাসাইটের ঝুঁকিও কমে। পরিচ্ছন্ন বিছানা শুধু আপনার ত্বক ও শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যই ভালো রাখে না, আপনার ঘুমের গুণগত মানও উন্নত করে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, আপনার রাতের ঘুম যেন কোনো জীবাণুর আখড়ায় পরিণত না হয়। এখন প্রশ্ন, আপনি শেষ কবে বালিশের কভার ধুয়েছিলেন?
আপনি যদি এই বিষয়ে আরও কোনো বিশেষজ্ঞের মতামত জানতে চান বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অন্য কোনো প্রতিবেদন পুনর্লিখন করতে বলেন, আমি প্রস্তুত।