কোন বয়সে কত ক্ষণ ঘুমোনো উচিত? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

রাত ১২টায় ঘুমোতে গেলে সকাল ১০টার আগে উঠতে পারেন না, আবার যে দিন তাড়াতাড়ি শুচ্ছেন, সে দিনও সকাল সকাল চোখ খুলতেই মন চায় না। চিকিৎসকেরা বলেন, এক জন প্রাপ্তবয়স্কের কম করে ৭-৯ ঘণ্টা টানা ঘুম জরুরি। তবে বয়স ও পেশার ধরন অনুযায়ী ঘুমের সময় বদলে যেতে পারে। তবে ৭ ঘণ্টা ঘুম চাই-ই চাই। এখন অনেকেই বলবেন যে, ৭ ঘণ্টার ঘুমে ক্লান্তি তেমন কাটে না। আবার ৯-১০ ঘণ্টা ঘুমোলে আরও বেশি ঝিমুনি লাগে। তা হলে ঠিক কত ক্ষণ ঘুমোনো উচিত? কম ঘুম যেমন ক্ষতিকর, বেশিও ঘুমও কিন্তু তা-ই। বয়স বুঝে ঘুমের সময় ঠিক করা খুব জরুরি।

কোন বয়সে কতটা ঘুম দরকার?

সার্বিক সুস্থতার জন্য দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। কিন্তু ঘুমের প্রয়োজনও সব বয়সে সমান থাকে না। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ৮ ঘণ্টা ঘুমোলে চললেও, শৈশব ও বয়ঃসন্ধিতে আরও বেশি ঘুমের প্রয়োজন।

‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে প্রকাশিত একাধিক গবেষণাপত্রে বয়স অনুযায়ী ঘুমের সময় নিয়ে লেখা হয়েছে। তালিকাটা ঠিক এই রকম—

সদ্যোজাত শিশু: দিনে ১৪-১৭ ঘণ্টা

৪-১১ মাস বয়সি শিশু: দিনে ১৪-১৫ ঘণ্টা

১২-৩৫ মাস হয়সি শিশু: দিনে ১২-১৪ ঘণ্টা

প্রি-স্কুলে পড়ছে এমন শিশু বয়স ৩-৬ বছরের মধ্যে: দিনে ১১-১৩ ঘণ্টা

প্রাথমিক স্কুলের শিশু ৬-১০ বছর বয়স: দিনে ১০-১১ ঘণ্টা

বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েরা ১১-১৮ বছর: দিনে ৯.২৫ ঘণ্টা

প্রাপ্তবয়স্ক: ৭-৮ ঘণ্টা

৬৫ বছরের উপর দিনে ৭ ঘণ্টা ঘুমই জরুরি। এর বেশি নয়।

শিশু বয়স থেকেই যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমোনো হয় সে ক্ষেত্রে তা প্রভাব ফেলে বুদ্ধির বিকাশ, মানসিক গঠন, শেখার ক্ষমতার উপর। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরেও সেই প্রভাব থেকে যায়। ক্রমাগত পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব ঝুঁকি বাড়ায় স্থূলত্ব, হার্টের অসুখ, ডায়াবিটিসের মতো শারীরিক সমস্যার। কমিয়ে দেয় আয়ুও।

এখন কথা হল, যদি কেউ রোজ ৯ ঘণ্টা বা তার বেশি ঘুমোতে শুরু করেন, তা হলে কী হবে? পাবমেড থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা খুব বেশি ক্লান্তি থাকলে এক আধদিন ৯ ঘণ্টা ঘুমোনোই যায়।

তবে রোজ যদি ৯ ঘণ্টা বা তার বেশি কেউ ঘুমোন, তা হলে হিতে বিপরীত হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুমকে বলে ‘হাইপারসমনিয়া’। এর নানা প্রভাব পড়ে শরীরে, যেমন ক্লান্তি তো কাটবেই না, উল্টে দিনভর ঝিমুনি আরও বাড়বে।

দীর্ঘ ক্ষণ ঘুমোলে শারীরিক সক্রিয়তা অনেকটাই কমে যায়। ফলে মহিলা এবং পুরুষ উভয়েরই প্রজনন ক্ষমতায় প্রভাব পড়ে। বাড়ে স্থূলত্বও। বেশি ঘুমোলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়,হার্টের অসুখের ঝুঁকিও বাড়ে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *