দেব উত্থান একাদশী দুই দিন! ১ নাকি ২ নভেম্বর, কোন তারিখে উপোস করবেন গৃহস্থরা? আসল রহস্য ফাঁস – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
কলকাতা: বছরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তিথি, দেব উত্থান একাদশী বা দেবউত্থানী একাদশী নিয়ে বড় বিভ্রান্তি! এই বছর কার্তিক শুক্লপক্ষের এই পবিত্র একাদশী পড়েছে দুই দিন— ১ নভেম্বর (শনিবার) এবং ২ নভেম্বর (রবিবার)। এই পরিস্থিতিতে গৃহস্থরা কোন দিন উপবাস রাখবেন, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে তুমুল জল্পনা। পঞ্জিকা মতে, একাধিক কারণে এই তিথি দুই দিন ধরে পালিত হবে।
আসলে, পঞ্জিকা অনুযায়ী কার্তিক শুক্ল একাদশী তিথিতেই দেব উত্থান একাদশী ব্রত পালন করা হয়। কিন্তু যখন একাদশী তিথি দুই দিন ধরে থাকে, অথবা ‘হরি বাসর’-এর সময় দ্বিতীয় দিন দুপুর পর্যন্ত বা তারও বেশি থাকে, তখনই তিথি নিয়ে এই দ্বন্দ্বর সৃষ্টি হয়। কারণ, হরি বাসর শেষ না হওয়া পর্যন্ত একাদশীর ব্রত ভঙ্গ করা যায় না।
উজ্জয়িনীর মহর্ষি পাণিনি সংস্কৃত ও বৈদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিষাচার্য ড. মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি এই সমস্যার সমাধান দিয়েছেন। তাঁর মতে, উদয়া তিথির মান্যতা অনুযায়ী মূলত ২ নভেম্বর ব্রত পালন করা উচিত ছিল। কিন্তু যেহেতু ২ নভেম্বর দুপুর ১২:৫৫ মিনিটে হরি বাসর শেষ হচ্ছে, তাই গৃহস্থদের জন্য তিথির পরিবর্তন হচ্ছে।
গৃহস্থ এবং বৈষ্ণবদের জন্য সঠিক তারিখ ও সময়:
- গৃহস্থদের জন্য দেব উত্থান একাদশী ব্রত:১ নভেম্বর (শনিবার)
- শুভ মুহূর্ত: সকাল ০৭:৫৬ এএম থেকে ০৯:১৯ এএম (এই সময়ে ভগবান বিষ্ণুর পূজা করুন)।
- পারণ (ব্রত ভঙ্গ) সময়: ২ নভেম্বর দুপুর ০১:১১ পিএম থেকে ০৩:২৩ পিএম-এর মধ্যে।
- বৈষ্ণবদের জন্য দেব উত্থান একাদশী ব্রত:২ নভেম্বর (রবিবার)
- শুভ মুহূর্ত: সকাল ০৭:৫৬ এএম থেকে দুপুর ১২:০৪ পিএম পর্যন্ত।
- পারণ (ব্রত ভঙ্গ) সময়: ৩ নভেম্বর (সোমবার) সকাল ০৬:৩৪ এএম থেকে ০৮:৪৬ এএম-এর মধ্যে।
তিথি কখন শুরু ও শেষ?
পঞ্জিকা অনুসারে, দেব উত্থান একাদশী তিথির সূচনা হচ্ছে ১ নভেম্বর সকাল ৯টা ১১ মিনিটে এবং তা শেষ হবে ২ নভেম্বর সকাল ৭টা ৩১ মিনিটে।
এই একাদশীতে বিশেষ কী?
এই বছর দেব উত্থান একাদশীর দুই দিনই ‘চোর পঞ্চক’ যোগ থাকছে। এই সময়ে জিনিসপত্র চুরির আশঙ্কা থাকে বলে বিশ্বাস করা হয়। এছাড়াও, ১ নভেম্বর রাত ০৮:২৭ পিএম থেকে ২ নভেম্বর সকাল ০৬:৩৪ এএম পর্যন্ত এবং ২ নভেম্বর সকাল ০৬:৩৪ এএম থেকে সকাল ০৭:৩১ এএম পর্যন্ত ‘ভদ্রা’ যোগের প্রভাব থাকবে। যেহেতু ভদ্রার অবস্থান পৃথিবীতে, তাই এই সময়ে কোনো শুভ কাজ এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
এই পবিত্র দিনে উপবাস ও পূজা-অর্চনার মাধ্যমে সমস্ত দ্বিধা দূর করে ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদ লাভ করুন।