ইউরোপে হঠাৎ আইটি কর্মীদের বিশাল চাহিদা, কো ম্পা নিরা দিচ্ছে সরাসরি ওয়ার্ক ভিসা! ভারতীয় ছাত্রদের জন্য বিরাট সুযোগ – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
বিশ্বজুড়ে যখন টেক সেক্টরে ছাঁটাইয়ের খবর শিরোনামে, ঠিক তখনই উল্টো পথে হাঁটছে ইউরোপ। আমেরিকা-সহ অন্যান্য বৃহৎ অর্থনীতিতে আইটি কো ম্পা নিগুলো কর্মী ছাঁটাই করলেও, ইউরোপের একাধিক দেশে দক্ষ আইটি পেশাদারদের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই ঘাটতি পূরণে কো ম্পা নিগুলো এখন বিদেশি প্রার্থীদের, বিশেষত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের, সরাসরি ওয়ার্ক ভিসা স্পন্সরশিপের সঙ্গে চাকরি দিতে প্রস্তুত।
ইউরোপীয় ভাষা না জানলেও মিলছে চাকরি
একজন ভারতীয় আইটি কর্মী, যিনি ইরাসমাস মুন্ডুস স্কলারশিপের অধীনে ইউরোপে মাস্টার্স করতে এসেছিলেন, তিনি সম্প্রতি রেডিটে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে টেকনিক্যাল ডিগ্রি অর্জন করা শিক্ষার্থীদের জন্য এখন স্থানীয় ভাষা না জানলেও সহজেই চাকরি পাওয়া যাচ্ছে। তাঁর কথায়, “ইউরোপীয় কো ম্পা নিগুলো এখন শুধুমাত্র দক্ষতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, ভাষাকে নয়। বিশেষত পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলিতে আইটি ক্ষেত্রে প্রতিভার এতই অভাব যে, বিদেশি দক্ষ পেশাদারদের দ্রুত নিয়োগ করা হচ্ছে।”
কম খরচে পড়াশোনা এবং সরকারি ভর্তুকি
ওই ভারতীয় পেশাদার আরও জানান, ইউরোপে উচ্চশিক্ষার খরচ আমেরিকার তুলনায় অনেকটাই কম। ফ্রান্সের মতো দেশগুলোতে সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে ভর্তুকিও দিয়ে থাকে। তিনি বলেন, “জার্মানিতে ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে। তাই ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস এবং সুইডেনের মতো দেশগুলো ভারতীয়দের জন্য আরও ভালো বিকল্প হতে পারে।” তবে, তিনি সতর্ক করে দেন যে সুইজারল্যান্ড এবং ডেনমার্কে পড়াশোনার খরচ কম হলেও জীবনধারণের ব্যয় অনেক বেশি। তাই আর্থিক অবস্থা মজবুত না হলে এই দেশগুলোতে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
এই কোর্সগুলিতে রয়েছে সর্বাধিক সুযোগ
ইউরোপে বর্তমানে কম্পিউটার সায়েন্স, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, ডেটা সায়েন্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর মতো কোর্স করা শিক্ষার্থীদের জন্য কাজের সুযোগ সবচেয়ে বেশি। উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন প্রার্থীদের কো ম্পা নিগুলো সরাসরি ওয়ার্ক ভিসা স্পন্সরশিপও দিচ্ছে।
সেরা বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেওয়ার পরামর্শ
ভারতীয় আইটি কর্মী শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়েছেন যে, শুধুমাত্র শীর্ষ র্যাঙ্কিংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকেই ডিগ্রি নিতে হবে। কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে পাস করা ছাত্রদের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়। তাঁর মতে, বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া, ইতালি, স্পেন, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সাইপ্রাস এবং চেকিয়ার ক্ষেত্রে দেশের ‘নাম্বার ওয়ান’ বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেওয়া উচিত। অন্যদিকে, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের ক্ষেত্রে সেরা তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়কে লক্ষ্য করা ভালো। এছাড়াও, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানিতে সেরা পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়কে টার্গেট করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
নেটওয়ার্কিং বাড়াবে সুযোগ
তিনি এও বলেন যে, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক ও গ্লোবাল কর্পোরেটগুলোর সঙ্গে নেটওয়ার্কিং তৈরি করতে হবে, কারণ এই ধরনের কো ম্পা নিগুলোই প্রায়শই ওয়ার্ক ভিসা স্পন্সর করে। তিনি জানান, “আমার পরিচিত বৃত্তে যারা শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি পেয়েছে, তারা কোনো ঝামেলা ছাড়াই ইউরোপের আইটি কো ম্পা নিগুলোতে চাকরি পেয়েছে।”