পাকিস্তান-তালিবান কি ফের যুদ্ধে যাচ্ছে? ‘গুহা’য় ফেরত পাঠানোর হুঁশিয়ারি পাক মন্ত্রীর! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

ইসলামাবাদ: পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ফের যুদ্ধের দামামা বাজতে পারে। ইস্তাম্বুলে চার দিন ধরে চলা শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পরই কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ। তাঁর এই মন্তব্যে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

আসিফ সামাজিক মাধ্যমে (সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স) স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, পাকিস্তানে যদি আর একবার কোনও জঙ্গি হামলা বা আত্মঘাতী বোমাবাজি হয়, তবে আফগান তালিবানকে সম্পূর্ণভাবে মুছে দেওয়া হবে এবং তাদের আবারও গুহায় পালাতে হবে।

তিনি লেখেন যে, ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দেশগুলোর অনুরোধে পাকিস্তান শান্তি বজায় রাখার জন্য আলোচনায় বসেছিল, কিন্তু আফগান পক্ষের কাছ থেকে ‘বিষাক্ত’ বিবৃতি আসছে। তাঁর অভিযোগ, এই বিবৃতি তালিবান শাসনের ‘দ্বিচারিতা’ এবং ‘বিভক্ত মানসিকতা’ তুলে ধরে। আসিফ আরও দাবি করেন, তালিবান সরকারকে ভেঙে দিতে পাকিস্তানের পূর্ণ সামরিক শক্তির প্রয়োজন হবে না, সামান্য শক্তি প্রয়োগেই কাজ হবে।

পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী উপহাসের সুরে বলেন, তালিবানের যদি এতই ভরসা থাকে, তবে তারা একবার তোরা বোরার দৃশ্য (যেখানে তালিবান জঙ্গিরা লুকিয়ে ছিল) পুনরাবৃত্তি করে দেখতে পারে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, তখন গোটা বিশ্বের মানুষ দেখবে কীভাবে তারা প্রাণ বাঁচাতে পালাতে বাধ্য হচ্ছে। তাঁর মতে, তালিবানে বসে যারা যুদ্ধ উস্কে দিচ্ছে, তারা পাকিস্তানের সাহস এবং সংকল্পকে ভুলভাবে দেখছে। পাকিস্তান এবার আর চুপ করে থাকবে না।

খাজা আসিফ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পাকিস্তান তালিবানের ‘প্রতারণা’ এবং ‘ঠাট্টা’ অনেকদিন সহ্য করেছে। এখন পাকিস্তানের মাটিতে কোনো হামলা হলে তার ফল হবে অত্যন্ত মারাত্মক। বিশ্বের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে তাদের হুমকিগুলো শুধুমাত্র ফাঁকা আওয়াজ। যেকোনো ভুল পদক্ষেপের চরম মূল্য দিতে হবে তালিবান প্রশাসনকে।

আসিফ আফগানিস্তানের সেই ধারণারও সমালোচনা করেছেন, যেখানে বলা হয় যে এই ভূমি ‘সাম্রাজ্যের কবরস্থান’। তিনি পাল্টা বলেন, পাকিস্তান নিজেদের সাম্রাজ্য বলে না। তবে আফগানিস্তান আসলে তাদের ‘নিজস্ব জনগণের কবরস্থান’। তিনি ইতিহাস উল্লেখ করে বলেন, এই জায়গা বরাবরই বাইরের শক্তির খেলার মাঠ হয়ে থেকেছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, তালিবান সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আফগানিস্তানকে আবারও সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে। তাদের অর্থনীতি মূলত যুদ্ধনির্ভর, তাই সীমিত ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তারা যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছে। যদি তারা সত্যিই আফগান জনগণকে ফের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে চায়, তবে তারা তা করতেই পারে। তবে পাকিস্তান তা বরদাস্ত করবে না।

ইস্তাম্বুলের আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষের আশঙ্কা বেড়েছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ওপর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জাতিসংঘের আহ্বান, আলোচনা স্থগিত হলেও যেন নতুন করে লড়াই শুরু না হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *