তুলসী বিবাহ ২০২৫: তুলসী বিয়ের আগে কেন কুঁড়ি তুলে ফেলা হয়? গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তুলসী বিবাহ এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। প্রতি বছর কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বাদশী তিথিতে এই পুণ্য তিথি পালিত হয়। এই বছর, ২০২৫ সালের ২ নভেম্বর, রবিবার পালিত হবে তুলসী বিবাহ। এদিন দেবী তুলসীর সঙ্গে ভগবান বিষ্ণু বা তাঁর অবতার শালগ্রামের বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিষ্ণুর আরেক রূপ শালগ্রামের সঙ্গে দেবী বৃন্দার প্রতিরূপ তুলসীর এই শুভ সংযোগ ভক্তদের কাছে পরম পবিত্র।
কিন্তু তুলসী বিবাহ বা পূজার আগে তুলসী গাছে দেখা যাওয়া মঞ্জরী বা ‘কলি’ কেন সরিয়ে ফেলা জরুরি? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগতে পারে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, এর পিছনে রয়েছে এক গভীর তাৎপর্য।
মঞ্জরী সরানোর আসল কারণ কী?
মনে করা হয়, তুলসী গাছে যত বেশি মঞ্জরী বা ফুল দেখা যায়, দেবী তুলসীর তত বেশি কষ্ট হয়। এই মঞ্জরীগুলি আসলে দেবীর কষ্ট পাওয়ার লক্ষণ। তাই ভক্তরা মনে করেন, পূজার আগে গাছ থেকে মঞ্জরীগুলি সরিয়ে দিলে দেবী তুলসী শান্তি পান এবং তাঁর কষ্ট দূর হয়। যত কম মঞ্জরী থাকবে, তত বেশি লাভবান হবেন দেবী। এই কারণেই তুলসী বিবাহের আগে যত্ন সহকারে মঞ্জরী ছেঁটে ফেলা হয়। এর মাধ্যমে ভক্তরা দেবীর প্রতি তাঁদের সেবাপরায়ণতা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন।
তুলসী বিবাহের তারিখ ও তিথি
দ্রিক পঞ্জিকা অনুযায়ী, এই বছর ২ নভেম্বর, ২০২৫ রবিবার তুলসী বিবাহ অনুষ্ঠিত হবে।
- দ্বাদশী তিথি শুরু: ২ নভেম্বর, ২০২৫, সকাল ৭টা ৩১ মিনিটে।
- দ্বাদশী তিথি সমাপ্ত: ৩ নভেম্বর, ২০২৫, ভোর ৫টা ০৭ মিনিটে।
তুলসী বিবাহ কেন পালিত হয়?
এটি আসলে দেবী তুলসী (বৃন্দা) এবং ভগবান বিষ্ণু (শালগ্রাম) এর বিয়ের প্রতীক। এটি দেবউত্থানী একাদশীর পরের দিন পালিত হয় এবং এই দিন থেকেই হিন্দু ধর্মে সমস্ত প্রকার শুভ কাজ (যেমন বিবাহ, গৃহপ্রবেশ ইত্যাদি) শুরু হয়।
পূজা পদ্ধতি ও শুভ ফল
তুলসী বিবাহের দিন ভক্তদের বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। প্রবোধানী একাদশী বা শুভ মুহূর্তে তোরণ ও মণ্ডপ তৈরি করা হয়। ভগবান গণেশ ও মাতৃকাদের পূজার পর নদিশ্রাদ্ধ এবং পুণ্যাহবাচন করা হয়। সন্ধ্যায় বর, ভগবান বিষ্ণুর পূজা করেন এবং দেবী তুলসীকে সম্প্রদান করা হয়। এরপর কুশকণ্ডী হোম ও অগ্নি প্রদক্ষিণ করা হয়। বস্ত্র ও অলংকার দান করা হয়।
বিবাহে বাধা দূর করার সহজ উপায়
যাঁদের বিবাহে দেরি হচ্ছে বা বাধা আসছে, তাঁরা তুলসী বিবাহের দিন কিছু বিশেষ আচার পালন করতে পারেন। হলুদ মেশানো জলে স্নান করা এবং তুলসী মাতাকে হলুদ ও দুধ নিবেদন করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এতে দেবগুরু বৃহস্পতি মজবুত হন এবং বিবাহের সম্ভাবনা বাড়ে। পূজা শেষে ব্রাহ্মণ বা কোনো কুমারী কন্যাকে দান করাও অত্যন্ত পুণ্যদায়ক।