শীতকালে কেন বাড়ে আপনার রক্তচাপ ও সুগার? এই ৬টি কৌশল জানলে বিপদ এড়াতে পারবেন! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
শীতের আগমন মানেই শরীরে একাধিক পরিবর্তন। যারা শারীরিকভাবে কম সক্রিয় থাকেন বা স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চলেন না, তাদের জন্য এই পরিবর্তন ডেকে আনতে পারে বড় বিপদ। বিশেষত এই সময় অনেকেরই রক্তচাপ (Blood Pressure) এবং ব্লাড সুগারের (Blood Sugar) মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। কিন্তু কেন এমনটা হয়? আর কীভাবেই বা এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব? জেনে নিন বিশদে।
শীতকালে রক্তচাপ বৃদ্ধির কারণ কী?
ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরকে উষ্ণ রাখতে রক্তনালীগুলি সঙ্কুচিত হয়। এর ফলে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয় এবং রক্ত প্রবাহে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যার পরিণামে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।
এছাড়াও, শীতকালে শারীরিক কার্যকলাপ কমে যাওয়ায় দ্রুত ওজন বাড়ে, যা রক্তচাপ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এই সময়ে অনেকে বেশি ক্যালোরি, নুন এবং চিনিযুক্ত খাবার খান, যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। শীতকালে পর্যাপ্ত সূর্যালোক না পাওয়ায় শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হতে পারে, যা সরাসরি রক্তচাপকে প্রভাবিত করে।
শীতকালে ব্লাড সুগার বৃদ্ধির কারণ কী?
শুধু রক্তচাপ নয়, ঠাণ্ডায় ব্লাড সুগারের মাত্রাও বাড়তে পারে। শারীরিক কার্যকলাপ কমে যাওয়ায় গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
ঠান্ডার কারণে শরীরে কর্টিসল (Cortisol) নামের স্ট্রেস হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন ইনসুলিনের উৎপাদন কমিয়ে দেয় এবং লিভারকে বেশি গ্লুকোজ তৈরি করতে উৎসাহিত করে, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে।
অনেকেই শীতকালে রাতে কম জল পান করেন। এর ফলেও রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়তে পারে।
ঠান্ডায় কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন বিপি ও ব্লাড সুগার?
স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এই ৬টি সহজ কৌশল মেনে চলতে পারেন:
১. খাদ্যাভ্যাস: খাবারের তালিকায় শীতকালীন সবুজ সবজি, গোটা শস্য এবং মরশুমি ফল যোগ করুন। এটি গ্লুকোজের মাত্রা সঠিক রাখতে সাহায্য করবে।
২. মসলার ব্যবহার: প্রতিদিন সকালে দারুচিনি (Cinnamon) এবং ফ্ল্যাক্সসিড (Flaxseed) বা তিসি বীজ খাওয়া রক্তচাপ ও সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
৩. পর্যাপ্ত জল: ঠান্ডা লাগলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
৪. ব্যায়াম: বাইরে তীব্র ঠান্ডা থাকলেও ঘরের ভেতরেই স্ট্রেচিং, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা বা যোগাসন করার অভ্যাস করুন।
৫. উষ্ণতা ও মানসিক শান্তি: শরীরকে গরম রাখতে পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরুন। মানসিক চাপ কমাতে রিল্যাক্সিং বা মনকে শান্ত রাখার কৌশলগুলি অবলম্বন করুন।
৬. নিয়মিত ওষুধ: রক্তচাপ বা ব্লাড সুগারের জন্য যদি কোনো ওষুধ চলে, তবে তা সময়মতো অবশ্যই খান।