রাস্তার ত্রুটির জন্য কেন আমি একা দায়ী: নীতিন গডকরি – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
নয়াদিল্লি: রাস্তায় গর্ত হলে বা কোনো ত্রুটি দেখা দিলেই কেন সব দায় তাঁর? কেনই বা মিডিয়া শুধু তাঁরই ছবি ছাপায়? কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী নীতিন গড়করি-র এমন মন্তব্য এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল, যা ঘিরে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। “সারা দোষ আমিই কেন নেব?”—তাঁর এই সরস মন্তব্যটি অনেকের মনেই প্রশ্ন তুলেছে, তবে কি ব্যর্থতার দায় তিনি অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চাইছেন?
মঙ্গলবার সিআইআই ন্যাশনাল কনফারেন্সে ‘স্মার্ট রোডস অ্যান্ড ফিউচার’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে গড়করি বলেন, জাতীয় সড়কে ভ্রমণকারীরা এবার সহজেই জানতে পারবেন, তাঁরা যে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, সেটি কে তৈরি করেছেন। এই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকার দ্রুত এক নতুন ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে।
জানুন, আপনার রাস্তা কে বানিয়েছে
মন্ত্রী জানান, খুব শীঘ্রই হাইওয়ের ধারে বোর্ড লাগানো হবে। এই বোর্ডে একটি কিউআর (QR) কোড থাকবে, যা স্ক্যান করলেই যাত্রীরা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার, সরকারি আধিকারিক, এমনকী প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত মন্ত্রীর নাম এবং মোবাইল নম্বর পর্যন্ত জানতে পারবেন! কিউআর কোডে ঠিকাদারের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর এবং জরুরি হেল্পলাইন-এর মতো সমস্ত তথ্য থাকবে।
গড়করি বলেন, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশজুড়ে হাইওয়ে প্রকল্পগুলিতে আরও স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা আনা। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর থেকে ঠিকাদারকে আগামী ১০ বছর রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে হবে। যদি রাস্তায় কোনো ত্রুটি বা গর্ত দেখা যায়, তবে তার জন্য ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিকরাই দায়ী থাকবেন এবং দ্রুত তাঁদের তা সারিয়ে দিতে হবে।
মন্ত্রী জানান, নতুন এই কিউআর কোড ব্যবস্থা হাইওয়ে প্রকল্পগুলিকে আরও স্বচ্ছ করার পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের আরও ক্ষমতাশালী করে তুলবে এবং স্থিতিশীলতাকে উৎসাহ দেবে।
“সব আমার ঘাড়েই কেন?”
নীতিন গড়করি কৌতুক করে বলেন, “রাস্তায় গর্ত হলে মিডিয়া শুধু আমার ছবি কেন ছাপায়? ঠিকাদার, সচিব ও আধিকারিকদের ছবিও ছাপানো উচিত। সব দোষ আমার ঘাড়েই কেন পড়ে? সোশ্যাল মিডিয়ার সব প্রশ্নের জবাবও আমাকেই কেন দিতে হয়?”
মন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিরোধীরা এর সমালোচনা করে বলছেন, গড়করি ব্যর্থতার দায় অন্যের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। অন্যদিকে, এই নতুন কিউআর কোড ব্যবস্থার মাধ্যমে সড়ক নির্মাণে স্বচ্ছতা আসায় সাধারণ মানুষ এর প্রশংসা করছেন।
মন্ত্রী আরও জানান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রক বর্তমানে বার্ষিক প্রায় ৫৫,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করছে এবং তাঁর আশা, এই আয় আগামী দুই বছরের মধ্যে ১.৪ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছাবে।