পাঁচ বছর পর সীমান্তে ভারত-চিন সম্পর্কে বড় মোড়, বৈঠকে কী এমন ঘটল? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
নিউ দিল্লি: ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত এলাকায় শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য দুই দেশের কোর কমান্ডার স্তরের আলোচনায় অবশেষে সম্মতি তৈরি হয়েছে। এই মাসের ২৫ তারিখে চুশুল-মোলডো সীমান্ত বৈঠকস্থলে (বর্ডার মিটিং পয়েন্ট) অনুষ্ঠিত হয় এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনা। বৈঠকের পর বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আলোচনায় প্রধানত সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে সংঘর্ষ এড়িয়ে চলার পদ্ধতি, সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং টহলদারির ব্যবস্থা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, তা কমাতে দুই দেশই সামরিক স্তরে এই আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের অবস্থানে ভরসা রেখে সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার বিষয়েও ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-তে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফেরাতে সাহায্য করবে।
পাঁচ বছর পর আবার ‘ভাই-ভাই’
ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্কে গত পাঁচ বছর ধরে যে অবনতি চলছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সীমান্ত বিবাদ থেকে শুরু হওয়া এই টানাপোড়েন পরে কূটনৈতিক স্তরেও পৌঁছেছিল, যার ফলে দুই দেশের সম্পর্ক ছিল সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে। কিন্তু, বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক সমীকরণে যে পরিবর্তন আসছে, তার ঢেউ এসে লেগেছে এই সম্পর্কেও। সেই পরিবর্তন স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে দুই দেশের সম্পর্ক আবার ‘ভাই-ভাই’-এর দিকে এগোচ্ছে।
পাঁচ বছর পর, গত কিছুদিন আগে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবাও আবার চালু হয়েছে। এর ঠিক পরেই সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর এই বড় সিদ্ধান্ত দুই দেশের সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার দিকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল।
ভারত-চিন সম্পর্ক মজবুত করার ইঙ্গিত
এই পদক্ষেপগুলি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পথে। ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া বিমান পরিষেবা গত মাসেই আবার শুরু হয়। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, গালওয়ান উপত্যকার সংঘাতের পর যে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল, তা এবার দূর হবে। সাংহাই শীর্ষ সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং-এর সাক্ষাতে ভারত-চিন কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়টি ছিল অন্যতম আলোচ্য। বিদেশ মন্ত্রক সেই সময় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল যে বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু হওয়ায় দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় হবে এবং সহযোগিতা বাড়বে। এরপরে, ভারত-চিন সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য কোর কমান্ডার স্তরের এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মতি সেই আশাকে আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল।