বার্ষিক ৫০ লক্ষ টাকা আয়কারীদের আয়কর ছাড় দেওয়া উচিত, বাজেটের আগে এই আওয়াজ উঠেছিল – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৫ পেশ হওয়ার আগেই এবার সরাসরি ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়কে সম্পূর্ণ করমুক্ত করার দাবি জানালো শিল্পমহল। শিল্প বাণিজ্য সংস্থা পিএইচডি চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (PHDCCI) বুধবার এই প্রস্তাব নিয়ে সরব হয়েছে। তাদের দাবি, বার্ষিক ৫০ লাখ টাকার বেশি আয় হলেই কেবল ৩০ শতাংশ হারে সর্বোচ্চ আয়কর চাপানো হোক।
কেন এই বিপুল পরিমাণ আয়কে করমুক্ত করার দাবি?
বর্তমানে নতুন আয়কর ব্যবস্থায়, বার্ষিক ২৪ লক্ষ টাকার বেশি আয়েই সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ কর দিতে হয়। পিএইচডিসিআই তাদের বাজেট-পূর্ববর্তী সুপারিশে রাজস্ব সচিব অরবিন্দ শ্রীবাস্তবের কাছে সরাসরি কর ব্যবস্থার পাশাপাশি পরোক্ষ কর ব্যবস্থাতেও বেশ কিছু সংস্কারের দাবি জানিয়েছে।
শিল্প সংস্থাটির প্রধান যুক্তি হলো, করের হার কমানো হলে করদাতারা স্বচ্ছন্দ্যে আইন মেনে কর প্রদান (কমপ্লায়েন্স) করেন এবং এর ফলে রাজস্ব আদায় বাড়ে। তাদের দাবি, কর্পোরেট ট্যাক্সের হার প্রায় ৩৫ শতাংশ থেকে কমে ২৫ শতাংশ হওয়ার পরেও ২০১৮-১৯ সালে ৬.৬৩ লাখ কোটি টাকা থেকে ২০২৪-২৫ সালে ৮.৮৭ লাখ কোটি টাকায় বেড়েছে কর্পোরেট ট্যাক্স সংগ্রহ। এই তথ্য স্পষ্ট করে যে, করের হার হ্রাস করার ফলে আদায় বেড়েছে।
পিএইচডিসিআই জানিয়েছে, বর্তমানে ব্যক্তিগত আয়করের সর্বোচ্চ হার ৩০ শতাংশ। এর সাথে ৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত সারচার্জ যোগ হলে কিছু ক্ষেত্রে করের সর্বোচ্চ হার ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছায়। এই উচ্চ করের বোঝা করদাতার ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যেখানে আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ সরকারের খাতে চলে যায় এবং বাকি ৬০ শতাংশ তার ভোগের জন্য থাকে।
পিএইচডিসিআই-এর নতুন করের হার কেমন হবে?
পিএইচডিসিআই-এর সুপারিশ অনুযায়ী, ব্যক্তিগত আয়করের হার হওয়া উচিত এমন:
- ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ কর।
- ৩০ লক্ষ টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ২৫ শতাংশ কর।
- ৫০ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে ৩০ শতাংশ কর।
তাদের দাবি, এতে কেবল কমপ্লায়েন্স ও কর সংগ্রহই বাড়বে না, দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণীও বিরাট স্বস্তি পাবে।
এছাড়াও, পিএইচডিসিআই দেশে নতুন উত্পাদন ইউনিট তৈরিকে উত্সাহ দিতে ইনকাম ট্যাক্স অ্যাক্টের সেকশন ১১৫BAB পুনরায় চালু করার দাবি জানিয়েছে। এই ধারার অধীনে, নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করলে নতুন উত্পাদনকারী কো ম্পা নিগুলির জন্য ১৫ শতাংশ (সারচার্জ সহ) ছাড়যুক্ত কর্পোরেট ট্যাক্স হার প্রযোজ্য ছিল। এই সুবিধা পুনরায় চালু হলে বিদেশি সংস্থাগুলি ভারতে কারখানা স্থাপন ও বিনিয়োগে আরও উত্সাহী হবে।
পরোক্ষ করের ক্ষেত্রেও বড় সুপারিশ
পরোক্ষ কর ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পিএইচডিসিআই ফেসলেস মূল্যায়ন এবং অডিট বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দিয়েছে, যেমনটা আয়কর ব্যবস্থার ক্ষেত্রে করা হয়েছে। জিএসটি প্রদানের পরও চালান পাওয়ার আগেই পরিষেবার জন্য অগ্রিম প্রদানের উপর ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট (ITC) উপলব্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়াও, একই প্যানের অধীনে একাধিক জিএসটি রেজিস্ট্রেশন (বিভিন্ন রাজ্যে বা একই রাজ্যে) থাকা সংস্থাগুলিকে ইউনিটগুলির মধ্যে আইটিসি স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়ারও সুপারিশ করেছে শিল্পমহল।