পেনশনের নতুন নিয়ম: পারিবারিক পেনশনের জন্য নতুন নিয়ম! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
সরকারি কর্মীদের জন্য পরিবারিক পেনশনের নিয়মে বড় বদল আনল কেন্দ্র। সরকারি কর্মচারীর মৃত্যুর পর কার হাতে যাবে তাঁর প্রাপ্য পেনশন, এই নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্ক ও জটিলতার অবসান ঘটিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিশেষ করে সেইসব ক্ষেত্রে যেখানে কর্মীর একাধিক পত্নী ছিলেন, সেখানে পেনশন নিয়ে পরিবারে আইনি জটিলতা বাড়ে। এবার সেই সমস্যা সমাধানেই সুস্পষ্ট পথ দেখাল সরকার।
আসলে কী বলছে নতুন নিয়ম?
পেনশন ও পেনশনভোগী কল্যাণ বিভাগ (DoPPW) কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিসেস (পেনশন) বিধিমালা, ২০২১-এর নিয়ম ৫০-এর অধীনে এই নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। এর মূল লক্ষ্য হলো—পেনশনভোগী বা সরকারি কর্মচারীর মৃত্যুর পর পরিবারিক পেনশন পেতে যেন কোনো বিভ্রান্তি না থাকে।
পেনশন প্রথমে কার?
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীর মৃত্যুর পর পরিবারিক পেনশনের প্রথম দাবিদার হবেন তাঁর বিধবা বা বিধুর (আইনসম্মত স্বামী/স্ত্রী)। যদি তাঁরা না থাকেন, তবে যোগ্য সন্তানেরা এই পেনশন পাবেন। এরপরও কেউ না থাকলে, পেনশন পাবেন নির্ভরশীল মা-বাবা এবং সবশেষে শারীরিকভাবে অক্ষম ভাইবোনেরা।
একাধিক স্ত্রী থাকলে কী হবে?
যদি কোনো কর্মীর আইনত দু’জন স্ত্রী থাকেন, তাহলে নিয়ম ৫০(৮)(গ) অনুসারে পরিবারিক পেনশন দু’জনের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে। উদাহরণস্বরূপ, মাসিক পেনশন ২০,০০০ টাকা হলে দু’জন স্ত্রীই ১০,০০০ টাকা করে পাবেন।
কিন্তু সবচেয়ে বড় স্বস্তি এসেছে পরবর্তী বিধানে। যদি এই দু’জনের মধ্যে একজন স্ত্রী মারা যান বা অন্য কোনো কারণে পেনশন পাওয়ার অযোগ্য হন, তাহলে তাঁর প্রাপ্য অংশটি সরাসরি তাঁর সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। আগে এই ধরনের ক্ষেত্রে বিষয়টি আদালতে গড়ানো সাধারণ ঘটনা ছিল, যা এবার বন্ধ হবে।
দ্বিতীয় স্ত্রী কি সব সময় পেনশন পাবেন?
সরকার এটাও স্পষ্ট করেছে যে ‘বিধবা/বিধুর’ মানে শুধুমাত্র আইনিভাবে বিবাহিত স্বামী বা স্ত্রী। যদি প্রথম বিবাহবিচ্ছেদ না করেই কেউ দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন (যা হিন্দু বিবাহ আইন, ১৯৫৫-এর মতো আইনে অবৈধ), তবে সেই দ্বিতীয় স্ত্রী বা স্বামীকে পেনশন পাওয়ার কোনো অধিকার দেওয়া হবে না। অর্থাৎ, আইনি বৈধতাই এখানে মূল ভিত্তি।
পরিবারে পেনশনের অধিকার নিয়ে কোনো সমস্যা বা বিতর্ক দেখা দিলে, সরকার সমস্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে দ্রুত আইনি পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, যাতে পেনশন পেতে পরিবারের সদস্যদের অযথা ভোগান্তি না হয় এবং সঠিক প্রাপক দ্রুত সাহায্য পান। এই নিয়মের ফলে পেনশন পাওয়ার দীর্ঘদিনের জটিলতা ও অনিশ্চয়তা অনেকটাই কেটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।