মশার কামড় নেই, অসুস্থতা নেই! পৃথিবীতে এমন একটি জায়গা আছে যা সম্পূর্ণ মশামুক্ত – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
বিশ্বাস করুন আর না করুন! পৃথিবীতে এমন জায়গাও আছে, যেখানে নেই একটিও মশা। বহু বছর ধরে মশাবাহিত রোগমুক্ত এই জায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম হল আইসল্যান্ড। এখানকার জলবায়ু অত্যন্ত ঠান্ডা এবং জলের উৎসগুলো প্রায় সবসময় বরফে ঢাকা থাকে, যা মশার প্রজননের জন্য একদমই উপযুক্ত নয়। মশা শীতল রক্তের প্রাণী, তাদের বংশবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন গরম, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এবং স্থির জল। এই কারণেই এতদিন পর্যন্ত আইসল্যান্ডে মশার নামগন্ধও ছিল না।
কিন্তু এই নিশ্চিন্ত জীবনেও সম্প্রতি ফাটল ধরেছে! কিয়োস নামের একটি ছোট শহরে হঠাৎ করেই তিনটি মশা দেখা গেছে। এর মধ্যে দুটি ছিল স্ত্রী মশা এবং একটি পুরুষ। স্থানীয় বাসিন্দা বিয়র্ন হজালটাসন তাঁর নিজের বাগানে এদের দেখতে পান এবং তখনই বুঝতে পারেন, এরা সাধারণ মশা নয়। পরে আইসল্যান্ড ইনস্টিটিউট অফ ন্যাচারাল হিস্টরি নিশ্চিত করেছে যে মশাগুলি ‘Culiseta annulata’ প্রজাতির, যা তুলনামূলকভাবে শীতল অঞ্চলেও টিকে থাকতে পারে।
বিজ্ঞানীরা এই ঘটনার জন্য সরাসরি বিশ্ব উষ্ণায়নকে দায়ী করছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইসল্যান্ডের তাপমাত্রা অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়েছে। জানা গেছে, উত্তর গোলার্ধের অন্যান্য অংশের তুলনায় আইসল্যান্ডে উষ্ণায়ন চার গুণ দ্রুত হারে হচ্ছে। মে ২০২৫ সালে, এখানকার একাধিক অঞ্চলে টানা ১০ দিন তাপমাত্রা ২০°C-এর উপরে ছিল। এমনকি, এগ্লিসস্টাডির বিমানবন্দরে ২৬.৬°C তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল, যা ছিল উষ্ণতম মে মাসের দিন। তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং আর্দ্রতা মশার জন্য প্রজননের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে।
যদিও আইসল্যান্ডের মশা-মুক্ত তকমা এবার হয়তো প্রশ্নের মুখে, তবুও অ্যান্টার্কটিকা এখনও বিশ্বের একমাত্র মহাদেশ, যা পুরোপুরি মশা-মুক্ত। সেখানকার চরম ঠান্ডা এবং বরফের কারণে মশার ডিম ফুটতে বা লার্ভা বাঁচতে পারে না। তবে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, এভাবে উষ্ণায়ন চলতে থাকলে একদিন হয়তো সেই দুর্গেও মশা হানা দিতে পারে।