কর্নেলের স্ত্রীর সাথে সেনা অফিসারের প্রেম, দুবার হোটেলে নিয়ে যাওয়া, কঠোর ব্যবস্থা নিল সেনাবাহিনী – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
এক সহকর্মী সেনা অফিসারের স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগে বড় শাস্তির মুখে পড়লেন এক কলোনল। জেনারেল কোর্ট মার্শাল (GCM) তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছে। যদিও এই ঘটনার কেন্দ্রে থাকা মহিলা সম্পূর্ণ ভিন্ন কাহিনি তুলে ধরেছেন। কী এমন ঘটলো যা সেনার অন্দরেও তোলপাড় ফেলেছে?
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছিল ২০২৫ সালের মে মাসে, যখন অভিযোগকারী সেনা অফিসার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে অভিযুক্ত কলোনলের ‘অবৈধ সম্পর্ক’ থাকার অভিযোগ তোলেন। অভিযোগকারী স্বামীর দাবি, একটি বেনামী প্যাকেজে তিনি তাঁর স্ত্রীর কল ডিটেইলস পান, যা দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই শুরু হয় তদন্ত, যার ফলস্বরূপ কলোনলকে বরখাস্ত করার জন্য জেনারেল কোর্ট মার্শাল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
ব্রিগেডিয়ার জগমিন্দর সিং গিল ও ৬ জন কলোনলের নেতৃত্বে হেডকোয়ার্টার ইউনিফর্ম ফোর্সের অধীনে এই মামলার শুনানি হয়। এটিকে পরিচালনা করেন এইটথ মাউন্টেন ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মেজর জেনারেল কে. মহেশ। যদিও, এখনও পর্যন্ত সংবিধায়ক কর্তৃপক্ষের দ্বারা এই শাস্তির চূড়ান্ত অনুমোদন বাকি রয়েছে বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট জানিয়েছে।
কলোনলের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনার বিভিন্ন ধারায় মোট চারটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম অভিযোগে, সেপ্টেম্বর ২০২১ থেকে আগস্ট ২০২২ এর মধ্যে টেলিফোনে সহকর্মীর স্ত্রীর সাথে কথা বলার অভিযোগ থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিযোগ ছিল গুরুতর। অভিযোগ করা হয়, কলোনল সেপ্টেম্বর ২০২১ এবং এপ্রিল ২০২২-এ সহকর্মীর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে হরিদ্বার ও দেরাদুনের হোটেলগুলিতে রাত্রিযাপন করেছিলেন। এই দুটি অভিযোগেই কলোনলকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
এছাড়াও, কলোনলের বিরুদ্ধে চতুর্থ অভিযোগে ‘ডিপেন্ডেন্ট কার্ড’-এর জালিয়াতিপূর্ণ ও অসৎ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আদালত এই অভিযোগেও কলোনলকে দোষী সাব্যস্ত করে। ২০০৬ সাল থেকে বিবাহিত অভিযোগকারী স্বামী আদালতে জানান, হরিদ্বার ও লেহ ভ্রমণের পর থেকেই স্ত্রীর আচরণে পরিবর্তন দেখতে পান, যেখানে অভিযুক্ত কলোনলই থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন।
অন্যদিকে, কলোনলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে একেবারে অন্য গল্প শোনান অভিযুক্ত অফিসারের স্ত্রী। তিনি সাক্ষ্য দেন, অভিযুক্ত কলোনল তাঁর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহপাঠী। ৪২ বছর বয়সী একজন প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে কার সাথে কথা বলবেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তাঁর রয়েছে। তিনি কলোনলের সাথে কোনো হোটেলেই থাকার কথা অস্বীকার করেন। বরং, তিনি তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসা, পণ-এর জন্য হয়রানি এবং যৌন নির্যাতনের মতো দীর্ঘদিনের বৈবাহিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্বামীর সঙ্গে একসঙ্গে থাকা তাঁর পক্ষে আসাম্ভব হয়ে উঠেছিল।